ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আবাসিক হোটেলে ভিডিও ধারণ করে টাকা আদায়ের ফাঁদ

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩৭, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ২০:৪৪, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩
আবাসিক হোটেলে ভিডিও ধারণ করে টাকা আদায়ের ফাঁদ

রাজশাহীর একটি আবাসিক হোটেলে গোপনে ভিডিও ধারণ করে টাকা আদায়ের ফাঁদ পাতা হতো। হোটেলটিতে ভিডিওচিত্র ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করা হতো। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে ভুক্তভোগীরা টাকা দিয়ে রক্ষা পান। তবে শেষমেশ এক শিক্ষার্থীকে এভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে গিয়ে এবার প্রতারকেরাই ধরা পড়েছে।

এ নিয়ে পাঁচজনের নামে মামলা হয়েছে। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এই ঘটনা ঘটেছে রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার ‘পপুলার-২’ নামের আবাসিক হোটেলে। গ্রেপ্তার দুজনের মধ্যে একজন হলেন হোটেল ব্যবস্থাপকের নাম শরীফুল ইসলাম (২৮)। তার বাড়ি নওগাঁর পোরশা। তার সঙ্গে ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত কর্মকর্তা আব্দুল নূরকেও (১৯) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে। তাদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্র সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টা ১মিনিটে নগরীর রাজপাড়া থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে মামলা দায়ের করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে গত রোববার রাতে ওই হোটেলে ওঠেন। তার স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা হোটেলে ওঠার কিছুক্ষণ পরই শরিফ ও নূর গিয়ে দরজায় কড়া নাড়েন। তারা দাবি করেন অতিরিক্ত অর্থ। জানান, হোটেল কক্ষের ভেতরের দৃশ্য তাদের ভিডিও করা হয়েছে। এখন টাকা না দিলে ভিডিও ফাঁস করা হবে। ওই রাতেই দুই শিক্ষার্থী হোটেল থেকে পালিয়ে বাঁচেন।

কিন্তু পরদিন সোমবার শরিফ ও নূর তাদের দফায় দফায় ফোন করে টাকা দাবি করেন। প্রথমে তিন লাখ, এরপর দুই লাখ, সর্বশেষ ৫০ হাজার টাকা দিলে ভিডিও প্রকাশ করা হবে না বলে তাদের জানানো হয়। বাধ্য হয়ে এই দম্পতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতাকে জানান। তিনি ওই হোটেলে গিয়ে নূর ও শরিফের ফোন তল্লাশি করে ভিডিওচিত্র পান। পরে পুলিশ ডেকে দুজনকে ধরিয়ে দেওয়া হয়।

রাজপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজল কুমার নন্দী বলেন, ভবনটির তিন তলা পর্যন্ত আবাসিক হোটেল। চতুর্থ তলায় ভবনের মালিকের বাসা। আর পঞ্চমতলায় ছাত্রাবাস। সেই ছাত্রাবাসেই আব্দুল নূর থাকেন। তিনি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। সেখানে থেকে তিনি ব্যবস্থাপকের সঙ্গে যোগসাজশে মানুষকে হয়রানি করে থাকেন। 

কাজল নন্দী আরও বলেন, ভুক্তভোগী এই দম্পত্তি হোটেলের তৃতীয় তলার কক্ষে ছিলেন। সেই কক্ষের দেয়ালে এমনভাবে ফুটো করা রয়েছে যে, সেখানে মোবাইলের ক্যামেরা ধরলে ঠিক বিছানোর অংশটুকু ধারণ করা যায়। কাজল নন্দী বলেন, মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

হোটেলের তিনজন মালিকের মধ্যে একজনের নাম শাহীনুল হক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না। জানলে আগেই এই কর্মচারীকে বের করে দিতাম।’ তিনি জানান, তারা পুলিশকে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। আইনে যা হয়, পুলিশ সেই ব্যবস্থা নিবে। এ ব্যাপারে তাদের আপত্তি নেই।
 

কেয়া/বকুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়