সাতক্ষীরায় কালবৈশাখীতে শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত

আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কয়েকটি গ্রাম। বৃহস্পতিবার (মার্চ ২৩) বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া ঝড়ে ধসে গেছে শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি। আধাপাকা বাড়ির টিনের চাল উড়ে গেছে। ঝড়ে কেউ হতাহত না হলেও এক জেলে নিখোঁজ রয়েছে। 

আকস্মিক আরম্ভ হওয়া ঝড়টি শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর, কৈখালী ও মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যায়। 

স্থানীয়রা জানান, বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রখর রোদ ছিল। হঠাৎ করে চারদিক অন্ধকার হয়ে ঝড় শুরু হয়। ঝড়ের তাণ্ডব এতই বেশি ছিল যে ঘরের দেয়াল ধসে গেছে। গাছপালা পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

রমজাননগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ আল মামুন বলেন, তার ইউনিয়নের কালিঞ্চী, মধ্যপাড়া, গেটপাড়া, কলোনিপাড়া ও খাসখামারসহ কয়েকটি গ্রামে ৫০টির মতো কাঁচা ঘরের দেয়াল ধসে পড়েছে। ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে খেতের ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। তাদের মধ্যে আলী আজগার বুলু, মোস্তাফিজুর গাজী, জাহিদ গাজী, নূর ইসলাম, গোলাম কাগুচী, নূর মোহাম্মদ, অবনী মণ্ডল, অলিউল্লাহ গাজী, মুজিবর গাজী, রেজাউল গাজী, খোকন কাগুচী, রহিম কাগুচী, শফিকুল গাজী ও হযরত আলী সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান অসীম কুমার মৃধা বলেন, তার ইউনিয়নের টেংরাখালী, পারশেখালীসহ কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ে ১৫-২০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু ঘরবাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। 

শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম জানান, তার ইউনিয়নের বৈশখালী, পশ্চিম কৈখালী ও কাঠামারী এলাকার ৩০টির মতো অস্থায়ী ঘর ঝড়ে পড়ে গেছে। পূর্ব কৈখালী গ্রামের সাহেব আলী, বিষে গাজী, শাহীন আলম, আফছার আলী, আইয়ুব আলী, রফিকুল ইসলাম, সলেমান গাজী, আব্দুল গাজী, ছিদ্দিক গাজী, জয়নাল গাজী, কালাম গাজী, ফজলু গাজীর কাঁচা পাকা বাড়ি ধসে পড়েছে। পূর্ব কৈখালী গ্রামের রমজান আলীর ছেলে রুহুল কুদ্দুস নামের এক জেলে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে। তিনি ঝড়ের সময় নদীতে মাছ ধরছিলেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ঝড়ের সময় নৌকা ডুবে মারা গেছে। 

শ্যামনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শাহিনুল ইসলাম জানান, হঠাৎ ঝড়ের আঘাতে কয়েকটি গ্রামের বেশ কিছু পরিবারের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আক্তার হোসেন জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। 

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, আকস্মিক শুরু হওয়া ঝড়টি কালবৈশাখী। এ ধরনের ঝড় হঠাৎ করে আরম্ভ হয়, আবার থেমে যায়। এ সব ঝড়ের তীব্রতা অনেক বেশি থাকে। তবে খুব বেশি ক্ষতি করার আগে এ ধরনের ঝড় নিঃশেষ হয়ে যায়।