জামিনে বেরিয়ে বাদীর বাড়িতে আসামিদের তাণ্ডব

ঢাকার ধামরাইয়ে খেলার মাঠের জন্য আবেদন করে এক ব্যক্তির জমি দখলের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় জামিনে মুক্ত হয়েই বাদী ও তার স্বজনদের পরিবারের সদস্যদের মারধর, বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে আসামিদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাত ১০টার দিকে উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বড়নালাই গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

আরও পড়ুন: জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ, কেটে ফেলা হয়েছে গাছপালা

আহতরা হলেন- ফজলুল হক (৬৮), হাবিবুর রহমান (৫৮), রোজিনা (৩৫), সাজেদা বেগমকে (৫৫), আবুল কাসেম (৫৫), মমতাজ বেগম (৪৫), সুমন আহমেদ (৩৫), আসমা বেগম (৪৫)। তারা মানিকগঞ্জ ও সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

পূর্বে দায়ের হওয়া লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগীরা জানান, মাঠ করার নামে এলাকার কিছু লোকজনকে নিয়ে ভুক্তভোগীর একটি জমি দখলের চেষ্টা করছেন একই গ্রামের বাসিন্দা ও একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সাটুরিয়া উপজেলার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান। তবে সেখানে মাঠের অনুমোদন দেয়নি প্রশাসন। এনিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই জমির গাছ কেটে পতাকা পুতে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ হয়। পরে গত ২০ মার্চ আদালতে ও থানায় ৩৫ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়। সেদিন রাতেও ভুক্তভোগীর বাড়িতে হামলা করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে আসামিরা। পরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। 

ভুক্তভোগীরা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কারাগারে থাকা দুই আসামিসহ অন্যরা আদালত থেকে জামিন পান। এর পরই আসামিরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাতেই বাদী ও তার স্বজনদের বাড়িতে হামলা চালায়। আসামিরা কয়েকজনকে মারধর ও একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।

আহত ফজলুল হক মাস্টারের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে মো. সোলাইমান ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানান, রাতে ১০টার দিকে আমারা শোয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এসময় চিৎকার চেচামেচির শব্দ শুনতে পাই। আসামিরা ঘরে ঢুকে আমাকেসহ আমার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাবা-মাকে মারধর করে। প্রায় ১০-১৫ মিনিট মারধরের পর আসামিরা চলে যায়। পরে জানতে পারি আসামিরা একইভাবে আমাদের অন্য স্বজনদের বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে। তারা ঘরে থাকা টাকা ও স্বর্ণ লুট করেছে। এছাড়া ওই জমির পাশে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকের বাড়ির গোয়াল ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। আসামিরা চলে গেলে স্থানীয় লোকজনরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এঘটনা আজ (শুক্রবার) মামলা করা হবে।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল আমিন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি। কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে। একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল, তবে ওই বাড়ির লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলেন। বিষয়টি নিয়ে আরেকটি মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ভুক্তভোগীদের। আমরা তদন্ত করছি।

ধামরাইয়ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার বলেন, মাঠের আবেদন করা হলেও এখনো মাঠ হিসেবে সেটি বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।