ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জেলিফিশ-ডলফিনের পর সৈকতে ভেসে এলো বর্জ্য

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ১ এপ্রিল ২০২৩   আপডেট: ০৯:৪০, ১ এপ্রিল ২০২৩
জেলিফিশ-ডলফিনের পর সৈকতে ভেসে এলো বর্জ্য

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এবার ভেসে এলো সামুদ্রিক বর্জ্য

মৃত জেলিফিশ ও ডলফিনের পর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এবার ভেসে এলো সামুদ্রিক বর্জ্য। এসব বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিকের বিভিন্ন সামগ্রী, কাঁচের বোতল, ছেড়া জাল, প্লাস্টিকের বোতলসহ মানুষের ব্যবহার্য নানা সামগ্রী।

শুক্রবার (৩১ মার্চ) সকাল থেকে জোয়ারের সঙ্গে সমুদ্র সৈকতের কলাতলী থেকে কবিতা চত্বর পয়েন্ট পর্যন্ত নানা ধরনের সামুদ্রিক বর্জ্য ভেসে আসে।

আবুল আহমেদ নামে স্থানীয় একজন লাবণী পয়েন্টে বর্জ্য কুড়াচ্ছেন। 
এ বিষয়ে তিনি বলেন, সৈকতে বর্জ্য ভেসে আসার খবর পেয়ে এখানে আসি। বর্জ্য থেকে প্রয়োজনী কাঠ, প্লাস্টিক সংগ্রহ করছি। 

বীচের কর্মী উজ্জ্বল বলেন, বৃষ্টির কারণে নালা-নর্দমার ময়লাগুলো সাগরে ভেসে আসে। পরে জোয়ারের সঙ্গে এসব বর্জ্য সৈকতে আসে। আমরা পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মাধ্যমে এসব বর্জ্য অপসারণ করার চেষ্টা করছি। 

সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার বলেন, আমরা ইতিপূর্বে লক্ষ্য করেছি যে, বিভিন্ন সময়ে ভেসে আসা প্লাস্টিক বর্জ্য কক্সবাজার সৈকতের দরিয়ানগর থেকে মহেশখালীর বিভিন্ন দ্বীপসহ সোনাদিয়া দ্বীপে এসে জমা হয়। সমুদ্রে নিম্নচাপ, বায়ুপ্রবাহ, পানির ঘূর্ণন (এডি), সমুদ্রের পানির গতি প্রবাহসহ সমুদ্র পৃষ্ঠের ধরনের ওপর ভিত্তি করে সমুদ্র উপকূলের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ভাসমান প্লাস্টিকসহ ও অন্যান্য বর্জ্য জমা হয়। গত কয়েকদিন ধরে আমরা বঙ্গপোসাগরে একটি ছোট আকারের নিম্মচাপ লক্ষ্য করেছি। 

আরও পড়ুন :ফের সৈকতে ভেসে এলো হাজারো মৃত জেলিফিশ

বিজ্ঞানী বেলাল হায়দার বলেন, এসব নিম্ন চাপে জোয়ারের সময় সমুদ্র উপরি পৃষ্ঠের পানি অতি মাত্রায় বেড়ে গিয়ে ফুলে উঠে এবং ঘূর্ণনের ফলে সমুদ্রের ভাসমান প্লাস্টিক বর্জ্য একসাথে জমা হয়ে ভেসে আসে সমুদ্র সৈকতে। মানুষের ব্যবহার্য প্লাস্টিক বর্জ্য, মাছ ধরার জাল, জালের ফ্লোট, কাঁচের বোতল, ফোম, রশিসহ হাজার হাজার টন বর্জ্য সমুদ্র সৈকতে এসে জমা হয় এবং কক্সবাজার উপকূলে অবস্থিত বিভিন্ন লতা, গুল্ম, ও ম্যান গ্রোভের সঙ্গে আটকা পরে। 

তিনি আরও বলেন, সমুদ্র কূলের যে সব জায়গার ভেজিটেশন লাইন ও ওয়াটার লাইন এর দূরত্ব বেশি সে জায়গার লম্বা দূরত্ব অতিক্রম করে জোয়ারের পানি আসতে না পারায় প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো প্রায়শই দরিয়ানগর থেকে শুরু করে সোনাদিয়া-মহেষখালী সমুদ্র কূলে আটকা পড়ে। সূর্য্যের অতি বেগুনী রশ্মী এসব প্লাস্টিককে ভেঙে মাইক্রোপ্লাস্টিক এ পরিণত করে।

তিনি আরও বলেন, অনিতিবিলম্বে এই বর্জ্য অপসারণ না হলে সৃষ্ট মাইক্রোপ্লাস্টিকের কারণে সমুদ্রের জীব বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পরবে। সেইসঙ্গে ভবিষ্যতে মানুষের জন্য বিশাল স্বাস্থ‌্য ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠবে। বর্জ্য ভেসে আসার কারণ আরও বিশদভাবে জানার জন্য বে অব বেঙ্গলের সিজনাল এডি ফরমেশন (পানির ঘূর্ণন), বায়ুপ্রবাহের গতি ও দিক এবং কক্সবাজার কোস্টাল এলাকার বটম ট্রপগ্রাফির ওপর গবেষণা দরকার।

এদিকে, সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা এসব বর্জ্যের উৎস জানতে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে দুটি ইরাবতী ডলফিন ভেসে আসে।

তারেকুর রহমান/ইভা 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়