ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

কানসাটে খিরশাপাত আমের মণ ২৫০০ টাকা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫০, ২৭ মে ২০২৩  
কানসাটে খিরশাপাত আমের মণ ২৫০০ টাকা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বৃহত্তম আম বাজার কানসাট। এই বাজারে ইতোমধ্যে আসতে শুরু করেছে আঁটি-গুটিসহ কয়েক রকমের আম। এই বাজারে এখন রকম ভেদে প্রতিমণ আম ৬০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। 

বর্তমানে বাজারে আমের দাম ভালো পেলেও, আগামীতে আমের ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত বাগান মালিকরা। বাগানিরা বলছেন, এবার আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এরআগে যতবারই আমের ফলন ভালো হয়েছিলো ততোবারই আমের ন্যায্য দাম না পেয়ে অনেকেই লোকসানের মুখ দেখেছিলেন। আর তাই আম বিদেশে রপ্তানি করা গেলে বাগানিরা লাভবান হতে পারবেন।  

সরেজমিনে কানসাট বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমণ আঁটি-গুটি আম রকম ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে। পাকা-আধাপাকা গোপলভোগ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে আজ শনিবার (২৭ মে) থেকে বাজারে আসতে শুরু করেছে খিরশাপাত আম। বাজারে এই আম রকম ভেদে ১৬০০ থেকে ২৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করছেন বাগান মালিকরা।

বাজারে আম বিক্রি করতে আসা বাগান মালিকরা জানান, গত বছর আমের ফলন কম হলেও, দাম পেয়েছেন দ্বিগুণ। এবার বালাইনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমের পরিচর্যায় খরচ বেড়েছে তাদের। এবার অন ইয়ার বা বেশি ফলনের বছর হওয়ায় বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে এখন কম আম আসছে তাই, তারা আমের দামটা বেশি পাচ্ছেন। কিন্তু বাজারে যখন বেশি পরিমাণে আম আসতে শুরু করবে তখন ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত তারা। তাদের দাবি- এই আম বিদেশে রপ্তানি করা গেলে তারা কিছুটা হলেও লাভবান হতে পারবেন।

শিবগঞ্জের শ্যামপুর প্রায় ১২ বিঘা জমিতে সব ধরণের আমের চাষবাদ করেছেন সানাউল্লাহ। তার বাগানে গত বছরের থেকে এবার আমের ফলন ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এবার মুকুল হয়েছিলো বাগানে, আমেরও ভালো ফলন হয়েছে। গুটিসহ গোপালভোগ আম পাকতে শুরু করেছে, তাই বাজারে নিয়ে এসেছি। বাজারে আড়ৎদারেরা ভালোই দাম বলছেন। সাড়ে ৭০০ টাকা মণ দরে ৩ মণ আম বিক্রি করেছি। এবার আমের ফলন বেশি হওয়ার কারণে দাম কম পাওয়া যেতে পারে। তবে সরকার যদি আম বিদেশে রপ্তানি করতে সহায়তা করে তাহলে চাষি ও বাগান মালিকরা লাভবান হবে।

এদিকে, জেলার বৃহত্তর আম বাজারের আড়ৎ মেরামত ও নির্মাণের কাজ অনেকটাই সম্পন্ন হয়েছে। বাজারেও কয়েক জেলার আমের পাইকারদের দেখা যাচ্ছে। এসব পাইকাররা আম চাষি ও বাগান মালিকদের সঙ্গে কথা বলছেন। বাজারের পরিস্থিতি বুঝে আম কিনছেন  তারা। তবে খুব শিগগির বাজারে বড় পরিসরে আম আসবে বলে জানিয়েছেন কানসাট আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক টিপু।

ওমর ফারুক বলেন, এখনও সেভাবে কানসাট বাজারে আম বেচাকেনা শুরু হয়নি। তবে ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এই বাজারে আম বেচাকেনা জমে উঠবে। 

তিনি আরও বলেন, গতকাল শুক্রবার আগের কয়েক দিনের তুলনায় বেশি আম এসেছে। এখন বাজারে সব ধরণের গুটি আম, গোপালভোগ আর কিছু কিছু খিরশাপাত আম পাওয়া যাচ্ছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত বলেন, কানসাট আম বাজারের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের সবার সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। কানসাট বাজারের আশপাশের এলাকা জট মুক্ত রাখতে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাজারে পাশেই সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার জন্য আলাদা করে গ্যারেজ করা হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যা-যা করা প্রয়োজন তাই করা হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পলাশ সরকার বলেন, এবার আবহওয়ার কারণে অন্য জেলার চেয়ে কয়েকদিন পরে আমাদের এখানে আম পাকতে শুরু করেছে। আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যে পুরোদমে সব ধরণে গুটি, গোপালভোগ আম বাজারে আসতে শুরু করবে। এবার ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হয়েছে। এবছর আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। আবহওয়া ভালো  থাকলে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মেহেদী/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়