ধর্ষণের ভিডিও হবু বরকে পাঠানোয় ৭ বছরের কারাদণ্ড
রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
অস্ত্রের মুখে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। ধর্ষণের সময় অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম ওরফে শিবু (৫৫) নামের ব্যক্তি গোপনে ভিডিও ধারণ করেছিলেন। তুলে রেখেছিলেন কিশোরীর নগ্ন ছবিও। পরে ওই কিশোরীর বিয়ে ঠিক হলে ওই ছবি ও ভিডিও পাঠান হবু বরকে। এতে বিয়ে ভেঙে গেলে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই কিশোরী।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি সিরাজুল ইসলামকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিনটি ধারায় তাকে এ দণ্ড দেওয়া হয়। বুধবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন। পরে আসামিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। আসামি সিরাজুলের বাড়ি পাবনার চাটমোহর উপজেলায়।
আইনজীবী ইসমত আরা জানান, ২০২০ সালের ২৪ আগস্ট ওই কিশোরীকে অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন আসামি সিরাজুল। এসময় ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন সিরাজুল। ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তিনি ওই কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এছাড়া এসব কথা কাউকে বললে কিশোরীর ছোট ভাইকে হত্যারও হুমকি দেন। ভয়ে পেয়ে কিশোরী কাউকে কিছু জানাননি।
দুই বছর পর ওই কিশোরীর বিয়ের আয়োজন করে পরিবার। বিয়ের খবর জানতে পেরে সিরাজুল ওই ছবি এবং ভিডিও হবু বরের মোবাইল ফোনে পাঠান। এরপর হবু বর বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিষয়টি ওই কিশোরীর পরিবারকে জানায়। বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর ১৪ জুলাই ওই কিশোরী বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার পর সুস্থ হলে কিশোরী ধর্ষণের ঘটনাটি পরিবারের কাছে জানায়। এরপর ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালে আসে।
আইনজীবী ইসমত আরা জানান, আদালত আলাদা দুটি ধারায় আসামিকে ৩ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন। জরিমানার ২ লাখ টাকা অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি ধারায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার এই ১ লাখ টাকা অনাদায়ে আরও ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। কারাদণ্ডের সাজা সবগুলো একসঙ্গে চলবে বলেও রায়ে উল্লেখ করেছেন আদালত।
কেয়া/মাসুদ