ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘ইংল্যান্ডের কোচ হিসেবে থাকা-না থাকা আমার হাতে নয়’

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪৭, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫  
‘ইংল্যান্ডের কোচ হিসেবে থাকা-না থাকা আমার হাতে নয়’

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আরও এক হতাশাজনক অ্যাশেজ অধ্যায়ের পরও ইংল্যান্ড ক্রিকেটকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নিজেকেই উপযুক্ত মানুষ মনে করছেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। তবে একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেছেন, আগামী গ্রীষ্মে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের প্রধান কোচ হিসেবে তিনি থাকবেন কি না- সেই সিদ্ধান্ত তার হাতে নেই।

অ্যাডিলেডে তৃতীয় টেস্টে ৮২ রানে হার মানায় মাত্র ১১ দিনের মধ্যেই ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে অ্যাশেজ ধরে রাখে অস্ট্রেলিয়া। এই পরাজয়ের মধ্য দিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ইংল্যান্ডের টেস্টজয়হীন ম্যাচ সংখ্যা দাঁড়াল ১৮-তে। যার মধ্যে মাত্র দুটি ড্র। একই সঙ্গে বড় ধাক্কা খেয়েছে ম্যাককালামের আলোচিত ‘বাজবল’ দর্শন। যা নিয়ে ইংল্যান্ড দল নভেম্বরের শুরুতে অঘটনের স্বপ্ন দেখেছিল।

আরো পড়ুন:

ম্যাচ শেষে অধিনায়ক বেন স্টোকস স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তিনি নেতৃত্বে অটল থাকছেন, যদিও দল যে “খুবই বাজে খেলেছে”, তা স্বীকার করতেও দ্বিধা করেননি। সিরিজের আগের প্রস্তুতি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে মাত্র তিন দিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিপক্ষে। যা পর্যাপ্ত ছিল না বলে মত অনেকের।

এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন বোঝার ঘাটতি, প্রয়োজনীয় সময়ে খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত দিকনির্দেশনা না দেওয়া; এসব অভিযোগও উঠেছে। আর এসব কিছুর দায় এসে পড়ে হেড কোচ হিসেবে ম্যাককালামের ওপরই।

২০২২ সালের গ্রীষ্মে দায়িত্ব নেওয়ার পর শুরুটা আশাব্যঞ্জক হলেও সাম্প্রতিক সময়ে ফলাফলে বড় ধরনের ভাটা পড়েছে। ২০২৪ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ড জিতেছে ১২টি টেস্ট, হেরেছে ১৩টিতে। ম্যাককালাম–স্টোকস জুটির অধীনে মোট ৪৪ টেস্টে ইংল্যান্ডের রেকর্ড ২৫ জয় ও ১৭ হার। এই অ্যাশেজ বিপর্যয়ের ফলে ম্যাককালামের মেয়াদে চারবার পাঁচ ম্যাচের সিরিজ খেলেও একটিতেও জয় পায়নি ইংল্যান্ড।

ইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রব কি ম্যাককালামের চুক্তি ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাড়িয়েছেন এবং চলতি বছর তাকে সীমিত ওভারের দলগুলোরও হেড কোচ করা হয়েছে। ফলে এখন তাকে বরখাস্ত করতে গেলে ইসিবিকে ১০ লাখ পাউন্ডের বেশি ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে, এমনটাই শোনা যাচ্ছে।

নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ম্যাককালাম সরাসরি বলেছেন, বিষয়টি তার নিয়ন্ত্রণে নেই।

“আমি জানি না,” ২০২৬ সালের ইংলিশ সামারে টেস্ট দলের কোচ থাকবেন কি না, জানতে চাইলে বলেন ম্যাককালাম।

“এই সিদ্ধান্ত তো আমার হাতে নয়। আমি শুধু আমার কাজটা করে যেতে চাই, এখানে যেসব জায়গায় আমরা ভুল করেছি সেখান থেকে শেখার চেষ্টা করব, কিছু পরিবর্তন আনব। এসব প্রশ্ন অন্যদের জন্য, আমার জন্য নয়।”

কোচিংকে তিনি এখনও উপভোগ করছেন বলেও জানান, “এটা দারুণ একটা দায়িত্ব। ছেলেদের সঙ্গে বিশ্বজুড়ে ঘোরা, আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করা। সব মিলিয়ে উপভোগ্য। আমার লক্ষ্য শুধু মানুষগুলোর কাছ থেকে সেরা পারফরম্যান্সটা বের করে আনা।”

ম্যাককালামের বিশ্বাস, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দল এগিয়েছে, “আমরা এখনও পরিপূর্ণ দল নই, কিন্তু উন্নতি হয়েছে। আমাদের একটা পরিচয় তৈরি হয়েছে। এখন শেষ দুই টেস্টে সেই পরিচয়টাই দেখানোর সময়। অন্তত কিছু সম্মান রক্ষা করতে চাই।”

শুক্রবারের বক্সিং ডে টেস্টের আগে মেলবোর্নে পৌঁছেছে ইংল্যান্ড দল। স্কোয়াডের বাইরে থেকে কাউকে আনার সম্ভাবনা নাকচ করেছেন ম্যাককালাম। তবে একাদশে পরিবর্তন আসতে পারে। অলি পোপের জায়গায় জ্যাকব বেথেল এবং ব্রাইডন কার্সের বদলে ম্যাথিউ পটস খেলতে পারেন।

যদিও সিরিজ কার্যত হাতছাড়া, তবু অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট জয়ের খরা কাটানোর দুটি সুযোগ এখনও আছে ইংল্যান্ডের সামনে। সর্বশেষ ২০১১ সালে সিডনিতে টেস্ট জিতেছিল তারা। অ্যাডিলেডে তুলনামূলক লড়াকু পারফরম্যান্সের পর ম্যাককালামের বিশ্বাস, শেষ দুই ম্যাচে কিছু অর্জন করা সম্ভব।

 “পরের ম্যাচটা জিততেই হবে। চাপ আর প্রত্যাশা থাকবে, এটা মেনে নিয়েই মাঠে নামতে হবে। কিন্তু সীমাবদ্ধতা ছাড়াই ক্রিকেট খেলতে পারলে আমাদের সুযোগ তৈরি হবে। এই হারটা কষ্ট দেবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মেলবোর্ন ও সিডনিতে আমাদের কাজ এখনও বাকি। শেষ দুই টেস্ট থেকে যদি কিছু আদায় করতে পারি, সেটাই হবে বড় প্রাপ্তি।”

অ্যাশেজের ধাক্কা সামলেও এখন ইংল্যান্ডের সামনে একটাই চ্যালেঞ্জ, সম্মান বাঁচিয়ে সিরিজ শেষ করা। আর সেই লড়াইয়ে ম্যাককালামের ভবিষ্যৎও হয়তো নির্ভর করছে এই শেষ দুটো টেস্টের ওপরই।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়