ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বর্ষবরণে কক্সবাজার সৈকতে লাখো পর্যটক

তারেকুর রহমান, কক্সবাজার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৩, ১৪ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ১৪:১৭, ১৪ এপ্রিল ২০২৪
বর্ষবরণে কক্সবাজার সৈকতে লাখো পর্যটক

কক্সবাজারে নানা আয়োজনে বরণ করা হয়েছে বাংলা নতুন বর্ষকে। পয়লা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে রোববার (১৪ এপ্রিল) লাখো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে পর্যটনশহর কক্সবাজার। সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে জেলা প্রশাসন। এতে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অংশ নেন। 

এদিন, সমুদ্র সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণি পয়েন্টে পর্যটক আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে প্রতিটি পর্যটন স্পটে। কলাতলী থেকে লাবণি পয়েন্ট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সৈকতে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন বয়সের ও নানা শ্রেণি পেশার মানুষ সাগরের নোনাজলে গা ভাসিয়ে আনন্দ করছেন।

আরো পড়ুন:

অনেককেই সৈকতে ঘোড়ায় চড়ে, কাউকে আবার ওয়াটার বাইক (জেটস্কি) ও বিচ বাইকে সৈকত দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেছে। অনেককেই কিটকটে (ছাতা চেয়ার) গা হেলিয়ে দিগন্ত ছোঁয়া নীল জলরাশির সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেখা গেছে। বালুচরে দাঁড়িয়ে প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দঘণ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে রাখছিলেন অনেকে।

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার আকিবুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদ ও বাংলা নববর্ষের টানা ছুটিতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজার এলাম। অনেক জায়গায় ঘুরে দেখেছি। সমুদ্রস্নান শেষে কিটকট ছাতায় বসে আরাম করছি।’

কুমিল্লা কোটবাড়ির বাসিন্দা সাজ্জাদুল হাসান বলেন, ‘কক্সবাজারে পয়লা বৈশাখে ঈদের মতোই আনন্দ লাগছে। ধর্ম-বর্ণ ও দলমত নির্বিশেষে এই দিন সৈকতে লাখো মানুষের সমাগম দেখে সত্যিই অনেক ভালো লাগছে।’

কক্সবাজার সমিতিপাড়ার ঘোড়াওয়ালা মোহাম্মদ শাহিন বলেন, ‘ঈদের দিন থেকে ঘোড়ায় ভাড়া কম হলেও আজ পয়লা বৈশাখে মনের মতো ভাড়া হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরো কিছু ভাড়া পাবো বলে আশা করছি। পর্যটকরা আমার ঘোড়ায় চড়ে ছবি তুলছেন। এই মুহূর্তটা নিজের কাছে খুবই ভালো লাগছে।’

সৈকতে কর্মরত ফটোগ্রাফার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের পরেরদিন থেকে আয়-রোজগার হচ্ছে। আজ বৈশাখের প্রথম দিন আয় আগের চেয়ে একটু বেশি। দর্শনার্থীরা নানা রঙের জামা পড়ে ছবি তুলছেন। ভালো ছবি তুলে দিলে বকশিসও পাচ্ছি তাদের কাছ থেকে। সবমিলিয়ে এখন ভালো সময় যাচ্ছে।’

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘নানা প্রান্ত থেকে আসা বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই শতাধিক ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। পর্যটকদের রাতদিন নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদান ও নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে।’

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ‘কক্সবাজার প্রতিটি হোটেলে কক্ষ ভাড়ার তালিকা টাঙানোর নির্দেশনা দেওয়া আছে। অতিরিক্ত ভাড়া যেন আদায় না হয়, সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের পৃথক কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে। অতিরিক্ত টাকা আদায় করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

টানা ছুটিতে কক্সবাজার শহরের বাইরেও পর্যটকরা যাচ্ছেন। তারা কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটোয়ারটেক, শামলাপুর ও টেকনাফ সৈকতে ছুটে বেড়াচ্ছেন। সৈকত ছাড়াও আছে পাহাড়-ঝরনা, প্রাকৃতিক গুহাসহ নানা দর্শনীয় স্থান। এছাড়া সাগরদ্বীপ মহেশখালী ও সোনাদিয়া, রামু বৌদ্ধ বিহার, চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কেও পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। সেন্টমার্টিন ভ্রমণে পর্যটকদের প্রবল আগ্রহ থাকলেও নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেখানে যেতে পারছেন না দর্শনার্থীরা।

তারেকুর/মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়