ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ঘূর্ণিঝড় রেমাল

সুন্দরবনে ৪০ বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ২৯ মে ২০২৪   আপডেট: ০৯:৫২, ২৯ মে ২০২৪
সুন্দরবনে ৪০ বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে উপকূল যেমন লণ্ডভণ্ড হয়েছে, তেমনি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ খ্যাত সুন্দরবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাপকভাবে। গাছপালা উপড়ে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে বন্যপ্রাণীও মারা গেছে অসংখ্য। এ পর্যন্ত ৪০টি বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।

উপকূলের রক্ষাকবজ সুন্দরবন। রেমালের তাণ্ডব বুক চিতিয়ে ঠেকাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে সুন্দরবন। ঝড় চলে গেলেও সুন্দরবনে রয়ে গেছে ক্ষতচিহ্ন। বনবিভাগের জেটি, স্বাদু পানির পুকুরসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন অবকাঠামো। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ৩৯টি হরিণসহ ৪০টি বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ। বনের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল এসব মৃতদেহ।

আরো পড়ুন:

বিষয়টি নিশ্চিত করে খুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে বলেন, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৩৯টি মৃত হরিণ ও একটি মৃত বন্য শূকর উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৭টি হরিণ জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ঝড়ে শতাধিক স্বাদু পানির পুকুর নোনা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। আর ৭০টিরও বেশি জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সুন্দরবনে বনবিভাগের ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন-সংরক্ষক একেএম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, রেমালের বিষয়ে আমরা পূর্ব থেকেই সতর্ক ছিলাম। যার কারণে মানুষের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে অবকাঠামোর বেশকিছু ক্ষতি হয়েছে। সুন্দরবন মায়ের মতো বুক পেতে আমাদেরকে রক্ষা করে চলেছে। তথাপি ঝড়ে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হলদেবুনিয়া, কচিকাটাসহ অভয়ারণ্যের ক্যাম্পগুলোর রাস্তা ভেঙে গেছে। পুকুর ডুবে গেছে, পাড় ভেঙে গেছে। বেশকিছু ক্যাম্পের অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি ৫ থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। ফলে লোকালয়ে ভেসে আসা ৩টি হরিণ উদ্ধার করা হয় বুড়িগোয়ালিনী, গাবুরা, চুনকুড়ি নামক এলাকা থেকে। পরে হরিণগুলো সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিতে অবমুক্ত করা হয়েছে।

করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ইনচার্জ হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে এখানকার পর্যটক চলাচলের কাঠের সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙেছে অসংখ্য গাছপালা।

সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন বিভাগের জেটি, স্বাদু পানির পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সুন্দরবনের বেশ কিছু জায়গা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পূর্ব বন বিভাগের দুবলার চর, শেলার চর, কচিখালী, কটকা, শরণখোলা ও বরগুনা জেলার পাথরঘাটা স্টেশনের টিনের চাল উড়ে গেছে। কটকা কেন্দ্রের কাঠের জেটি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। বন কর্মী, জেলে, বাওয়ালি ও বন্যপ্রাণীদের জন্য সুপেয় পানির আধার পানিতে প্লাবিত হয়ে লবণ পানি ঢুকে গেছে। সুন্দরবনের কটকায় সুপেয় পানির পুকুরটি সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম অনেক জায়গায় নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের বিভিন্ন ক্যাম্পের ছোট ছোট ট্রলারগুলো জলোচ্ছ্বাসের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক কাঠ ভেসে গেছে। প্রবল বাতাসের ফলে বনের গাছ-গাছালি ভেঙেছে। বেশ কিছু বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর খবরও পেয়েছি।

নুর/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

ঘটনাপ্রবাহ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়