ঢাকা     রোববার   ১০ নভেম্বর ২০২৪ ||  কার্তিক ২৬ ১৪৩১

ঘূর্ণিঝড় রেমাল

বিধ্বস্ত উপকূলে খাবার পানির তীব্র সংকট

বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ৩১ মে ২০২৪   আপডেট: ২৩:০৮, ৩১ মে ২০২৪
বিধ্বস্ত উপকূলে খাবার পানির তীব্র সংকট

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে স্থলভাগে যে জলোচ্ছ্বাস হয়েছে তাতে জেলা শহর বাগেরহাটসহ উপজেলা শহরগুলো লোনা পানি দিয়ে প্লাবিত হওয়ায় বাসিন্দারা সুপেয় পানির তীব্র সংকটে পড়েছে।

লবণাক্ত পানি প্রবেশ করেছে সুপেয় পানির আধার সরকারি-বেসরকারি পুকুরে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন এলাকার পিএসএফ ও টিউবওয়েল। যার ফলে জেলার মোংলা, রামপাল, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকার অনেকে বাধ্য হয়ে লোনা পানি পান করছেন।

ঝড়ের তাণ্ডব শেষ হওয়ার পরে জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার পৌঁছালেও, সুপেয় পানির কোনো সরবরাহ নেই দুর্গত এলাকায়। নদী তীরবর্তী এলাকায় সুপেয় পানি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

আরো পড়ুন:

শরণখোলা উপজেলার দ্বীপচর এলাকার লিটন সওদাগর বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে আমাদের পুরো এলাকা লোনা পানিতে প্লাবিত হয়েছিল। এলাকার মানুষ আমাদের বাড়ির মিঠা পানির পুকুরের পানি পান করত।‌ পুকুরে লোনা পানি ঢুকে পড়ায় এখন খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে লবণাক্ত পানি পান করছেন অনেকে।

সাউথখালী ইউনিয়নের খুড়িয়াখালী গ্রামের নাইম শেখ বলেন, ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়েছে, ঘর ভাঙছে, রাস্তা ও বাড়ি-ঘরে পানি উঠছে। সেসব এখন স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। কিন্তু পুকুরের পানি যে লোনা হয়ে গেছে, তা মিঠা করবো কি দিয়ে। পানির যে কি কষ্ট তা বলে বোঝানো যাবে না।

একই গ্রামের ফারিয়া আক্তার বলেন, ঝড় চলে গেছে, কিন্তু আমাদের সব জায়গায় লবণ পানি দিয়ে গেছে। মূলত বৃষ্টির পানি খাচ্ছি আমরা। কিন্তু গোসল, রান্না এসব কাজের জন্য বাধ্য হয়ে লবণ পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে। অনেকের চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। পেটের পীড়াও হচ্ছে সাধারণ মানুষের।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার বহরবুনিয়া এলাকার ঘষিয়াখালী গ্রামের মো. জাহিদুল ইসলাম খলিফা বলেন, ঝড়ে এত বেশি পানি হয়েছিল যে পুরো এলাকা তলিয়ে গেছে। এখনও বেশিরভাগ জায়গায় পানি জমে আছে। বাজারে যে পুকুরের পানি সবাই পান করতো, সেই পুকুরের পানি এখন লবণাক্ত। রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খাওয়ার জন্য পানি কিনে আনব সেই উপায়ও নেই। সরকারিভাবে মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় পানির ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসানো হয়েছে। কিন্তু আমরা প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত। নদী তীরবর্তী দুর্গম এলাকাগুলোয় খাবার পানির সরবরাহ করার দাবি জানাচ্ছি।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত মল্লিক বলেন, বাগেরহাটের শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ ও মোংলাসহ দুর্গত এলাকার মানুষদের জন্য ভ্রাম্যমাণ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা ও মোংলা উপজেলায় ৩টি ভ্রাম্যমাণ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে প্রতিদিন ১২ হাজার লিটার সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এটি চলবে।

শহিদুল/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

ঘটনাপ্রবাহ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়