ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

৮ মাসে নিজ হাতে পবিত্র কোরআন লিখেছে স্কুলছাত্রী সোমা 

মোসলেম উদ্দিন, দিনাজপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৮, ২৬ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১৪:২৯, ২৬ জুলাই ২০২৪
৮ মাসে নিজ হাতে পবিত্র কোরআন লিখেছে স্কুলছাত্রী সোমা 

সোমা আক্তার

কোনো মাদরাসা কিংবা হুজুরের কাছে না পড়েও দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় মাত্র ৮ মাসে নিজ হাতে পবিত্র কোরআন শরিফ লিখেছে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সোমা আক্তার। তার এই দৃষ্টিনন্দন লেখা দেখে অবাক এলাকাবাসী। তার হাতের লেখা কোরআন শরিফ পেতে অনেকেই অর্ডার করছেন।

স্থানীয়রা জানায়, সোমা আক্তার চিরিরবন্দর উপজেলার মাঝাপাড়া গ্রামের আমিনুল ইসলামের মেয়ে। সে চিরিরবন্দর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বর্তমান সময়ের ছেলে-মেয়েদের থেকে সোমা একটু আলাদা। যে বয়সে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত, সেই বয়সে সোমা আক্তার নিজ হাতে নিখুঁত ভাবে কোরআন শরিফ লিখছে। এমনকি কোনো মাদরাসা বা কোনো হুজুরের কাছে এ বিষয়ে পড়েনি সোমা আক্তার। নির্ভুলভাবে পুরো কোরআন হাতে লিখেছে সে। তার চোখ জুড়ানো হাতের লেখায় পবিত্র কোরআন লিখে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

মাঝাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল হক বলেন, এই মেয়েটি আমাদের গর্ব। অত্র এলাকায় এযাবৎ কেউ নিজ হাতে পবিত্র কোরআন শরিফ লিখতে পারেনি। সোমা নিজেই তা করেছে। তবে অবাক করার বিষয় হলো মেয়েটি কোনো মসজিদ-মাদরাসায় লেখাপড়া করেনি। 

সোমা আক্তারের বড় বোন সুমি আক্তার বলেন, আমার ছোট বোন সোমা ছোট বেলা থেকেই তার হাতের লেখা সুন্দর। আরবি ক্যালিয়োগ্রাফি আঁট করতে পারে। কোনো মাদরাসায় সে পড়েনি। প্রথমে আমপারা দেখে আরবি অক্ষর লিখতে শিখে। পড়ে সে অল্প সময়ের মধ্যে পুরো কোরআন শরিফ লিখেছে। 

স্থানীয় মামুদপুর রসুলপুর হামীদিয়া সালাফিয়া ইয়াতিম খানা মাদরাসার হাফেজ মো. আব্দুল হাকিম সরকার বলেন, কোনো মাদরাসা বা হুজুরের নিকট না পড়ে এতো সুন্দর করে পবিত্র কোরআন শরিফ নিজ হাতে লেখা দেখে আমি  অবাক হই। সোমার হাতের লেখা কোরআন দেখেছি এবং পড়েছি, খুবি চমৎকার লেখা এবং নির্ভুল। তবে দুইএক জায়গায় একটু সমস্যা ছিলো। তাকে দেখিয়েছি, সেটা সংশোধন করেছে সে। বর্তমানে তার হাতের লেখা ৬টি কোরআন শরিফের কপি রয়েছে, এগুলো নির্ভুল। কোরআন শরিফগুলো দেখে বোঝা মুশকিল যে এগুলো হাতের লেখা। 

সোমা আক্তার রাইজিংবিডিকে বলেন, ছোট বেলা থেকেই আমি বিভিন্ন দৃশ্যের ছবি আঁকি। এটা আমার শখ। আমি আরবির ক্যালিয়োগ্রাফি আঁট করতে পারি। আমি কোনোদিন মাদরাসা বা হুজুরের নিকট আরবি পড়িনি। আরবি ক্যালিয়োগ্রাফি আঁট করা দেখে অনেকে উৎসাহ দেন কোরআন শরিফ লিখতে। তারপর থেকে চেষ্টা এবং সেই চেষ্টা থেকে আজ আমি পুরো পবিত্র কোরআন শরিফ লিখে ফেলেছি। 

সে আরও বলেন, আমার বাবা একজন খেটে-খাওয়া দিনমজুর মানুষ। কোথাও প্রাইভেট পড়ানোর মতো সামর্থ নেই। সংসার চালাতে বাবা হিমশিম খাচ্ছেন। এরই মধ্যে একজন সৌদি প্রবাসী আমার লেখা ৬টি কোরআন শরিফ অর্ডার দিয়েছেন। এগুলো আমি সম্পূর্ণ করেছে। আরও কিছু কোরআন শরিফ লিখেছি। যা আমি এতিমখানা ও মাদরাসায় দান করবো। তবে যদি কারও দরকার হয় আমাকে জানালে আমি করে দিবো।

/ইমন/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়