গোপালগঞ্জে দুই সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুদকের অভিযান
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

গোপালগঞ্জের দুই সরকারি প্রতিষ্ঠানে সোমবার অভিযান চালায় দুদক
নানা অনিয়মের অভিযোগে গোপালগঞ্জের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে দুর্নীতি দমন কমিশন গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচলক মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান পরিচালনা করে।
দুর্নীতি দমন কমিশন গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচলক মো. মশিউর রহমান বলেন, “সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের ব্যক্তিগত মালিকানায় নির্মিত সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কে সরকারি কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে পানির লাইন ও পানি নিষ্কাশন ড্রেনেজ নির্মাণ করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “বিভিন্ন গ্রামে টিউবয়েল ও ল্যাট্রিন বিতরণ, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, পানির লাইন সরবরাহে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও টিউবয়েল বিতরণে সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে কয়েকগুণ টাকা নেওয়ারও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এ ধরনের অসংখ্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যার সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক নেই। ব্যক্তি স্বার্থে জনগণের অর্থ ব্যয় করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহারসহ অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।”
মশিউর রহমান বলেন, “কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দী ইউনিয়নে জেলার সিভিল সার্জনের অজ্ঞাতসারে ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালে শুরু হলেও ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়নি। এ প্রকল্পের মোট মূল্য নির্ধারন করা হয়েছিল ১৬ কোটি ১৯ লাখ। এর মধ্যে ৮ কোটি ১২ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। কাজটির ঠিকাদার ম্যাক কন্সট্রাকশনের মালিক আলম। বর্তমানে কেটিএমসির (জেভি) মাধ্যমে কাজটি সম্পাদিত হচ্ছে। এই প্রকল্পটির বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম হাসানুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে সাইট ইঞ্জিনিয়ার গোপালগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রকৌশলের অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. ইব্রাহীম খলিল ফারুকী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. সিহাব উদ্দিন হাসপাতাল নির্মাণ কাজ তদারকি করছেন।”
দুদকের এই কর্মকর্তা আবলেন, “ইতোমধ্যে এ হাসপাতালটি নির্মাণের জন্য তিনবার সময় বৃদ্ধি করা হলেও উক্ত প্রকল্পের ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ার পরস্পর যোগসাজশে কাজ সমাপ্ত না করে মূল্য বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে বারবার ব্যয় বৃদ্ধি করাচ্ছেন। এতে সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ও জনগণ স্বাস্থ্য সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। অল্প কাজ করে বেশি বিল নিয়ে ঠিকাদার ভেগে (পালিয়ে) গেছেন। উক্ত ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে নতুন বাজেটে কাজ শুরু করার পায়তারা করা হচ্ছে। অথচ সিভিল সার্জন অফিস বা স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের না জানিয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশলের অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও ঠিকাদারগণ সরকারের বিপুল অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষতি করছেন। দীর্ঘ ৫ বছর অতিক্রান্ত হলেও কাজ শেষ না হওয়ায় ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে তদন্তসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ