ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

অস্তিত্ব সংকটে হেতালবাড়িয়ার খাল, অনাবাদি হাজারো কৃষকের জমি

পটুয়াখালী (উপকূল) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৯, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১২:১০, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
অস্তিত্ব সংকটে হেতালবাড়িয়ার খাল, অনাবাদি হাজারো কৃষকের জমি

পলি জমে থাকায় হেতালবাড়িয়ার খালে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে

দখল, দূষণ এবং পলি মাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের হেতালবাড়িয়ার খাল। ফলে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে খালটিতে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ। খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে অনাবাদি থাকছে হাজারো কৃষকের জমি। দ্রুত সময়ের মধ্যে খালটি খনন করে পানি প্রবাহ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

কৃষকরা জানান, আরপাঙ্গাশিয়া নদীর শাখা থেকে হেতালবাড়িয়া খালের উৎপত্তি হয়েছে। দুই যুগ আগেও এই খালে চলাচল করতো পণ্যবাহী ট্রলারসহ ছোট-বড় নৌকা। খালের পানি ব্যবহার করেই কৃষকরা শুষ্ক মৌসুমে তাদের জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করতেন। বর্তমানে দখল ও দূষণের কারণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে খালটি। রজপাড়া হেতালবাড়িয়া স্লুইজ সংলগ্ন প্রধান ফটকে পলি জমে ভরাট হয়ে মাটির বড় স্তূপ জমে রয়েছে। যে কারণে স্লুইজ গেট থেকে খালে স্বাভাবিক পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। 

আরো পড়ুন:

এছাড়া অনেকেই খালটি দখল করে গড়ে তুলেছেন ছোট ছোট স্থাপনা। পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় প্রায় ২ কিলোমিটারের এ খালটির অর্ধেক এখন মৃত। শুধু হেতালবাড়িয়া খালই নয়, পানি প্রবাহ না থাকায় এ খালের সঙ্গে যুক্ত জীন খাল, মৌশার খাল ও স্বনির্ভর খালসহ অন্তত পাঁচটি শাখা খালও এখন মৃতপ্রায়। ফলে শীত মৌসুমে মিঠা পানির অভাবে রজপাড়া ও পশ্চিম বাদুরতলী গ্রামের হাজারো কৃষক তাদের জমি চাষাবাদ করতে পারছেন না। 

হেতালবাড়িয়ার খালের দূর্ষিত পানি  


টিয়াখালী ইউনিয়নের দাড়োগা বান এলাকার কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, “আমাদের কলাপাড়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা এই মৌসুমে তরমুজ চাষ করেন। মিঠা পানির অভাবে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমাদের জমি খিল (অনাবাদি) রাখতে হয়। খাল মৃত অবস্থায় থাকায় নদী থেকে পানি প্রবেশ করতে পারে না। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারের কাছে খালটি খননের অনুরোধ জানাচ্ছি।” 

পশ্চিম বাদুরতলী গ্রামের কৃষক সালাম ফকির বলেন, “স্বনির্ভর খালের ওখানে আমাদের নিজস্ব জমি রয়েছে। খালে পানি না থাকায় আমরা সেখানে রবি শষ্যসহ শীতকালিন সবজি চাষ করতে পারছি না। যে কারণে শুধুমাত্র বর্ষা মৌসুমে আমন ধান চাষ করি।” 

তিনি আরো বলেন, “অনেক সময় জমিতে বৃষ্টির পানি জমে ধানের বীজ নষ্ট হয়ে যায়। খাল মরে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি খাল থেকে নদীতে নামতে পারে না। শুধু আমার জমিই নয়, একটু বর্ষা হলে অধিকাংশ জমিতে পানি জমে থাকায় অনেক সময় চাষাবাদও করা যায় না। অনেকের জমি প্রায় বছরই খিল (অনাবাদি) থাকে।”

কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন সাদেক বলেন, “হেতালবাড়িয়ার খালের বিষয়টি উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হবে। খালটির দখল হয়ে যাওয়া অংশ উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান এবং খননের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়