ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বিরল শালবনে বিলুপ্তপ্রায় ‘খুদি’ খেজুরের সন্ধান

দিনাজপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ১৫ মে ২০২৫   আপডেট: ১১:৩৯, ১৫ মে ২০২৫
বিরল শালবনে বিলুপ্তপ্রায় ‘খুদি’ খেজুরের সন্ধান

দিনাজপুরের বিরল শালবনে সন্ধান মিলেছে ‘খুদি’ খেজুরের

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ধর্মপুর শালবনে সন্ধান মিললেছে বন খেজুর বা খুদি খেজুরের। ইতিমধ্যে শালবনটিতে খেজুর গাছ দেখতে দূর থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা। বিরল প্রজাতির এই উদ্ভিদ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বন বিভাগ।

ধর্মপুর শালবন ঘুরে দেখা যায়, এই ‘খুদি’ খেজুর গাছের পাতা আর কাঁটা দেখতে সাধারণ খেজুর গাছের মতোই। তবে গাছটির আকার আর ফল দেখে কিছুটা দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়তে হবে। প্রায় কাণ্ড বিহীন এই গাছ সাধারণ খেজুর গাছের মত সকল বৈশিষ্ট্য থাকলেও এটি বন খেজুর বা খুদি খেজুর। যেটি এখন বিপন্নপ্রায় বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ। 

এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে এই খেজুর দেখে এবং খেয়ে এলেও গাছটি সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না তাদের। সম্প্রতি বন বিভাগ ও উদ্ভিদ গবেষকরা এলে গাছটি সম্পর্কে ধারণা পান তারা। 

এই খেজুর ছোট অবস্থায় সবুজ রঙের থাকে। একটু বড় হলে লালচে হয় এবং পরিপক্ক অবস্থায় জামের মতো কালচে হয়। খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু, গাছের গোড়ায় ফল ধরে। আকারে দেশি জাতের খেজুরের মতো। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসের দিকে এই খুদি খেজুর পাকে।

জিয়াউর রহমান, জিল্লুর, রহমত আলীসহ কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, আমরা ছোট বেলা থেকে এই বনে ঘুরে বেড়াই। ছোট থেকেই এই গাছগুলো দেখি এবং এর ফলও খেয়ে আসছি। আমরা সবাই এই খেজুরটাকে ‘কুঁজি’ খেজুর বলে ডাকি। তবে আমরা এই গাছের গুরুত্ব তেমন জানতাম না। বন বিভাগ ও ঢাকা থেকে লোকজন যখন আসলো এবং বলল যে এটা বিপন্ন প্রজাতির একটা গাছ, তখন বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। আমরা চাই বন বিভাগ এই বিরল প্রজাতির গাছগুলো সংরক্ষণ করবে।

ধর্মপুর বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মহসীন আলী বলেন, “ধর্মপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর শালবনে যে খেজুর গাছ পাওয়া গেছে তাকে ‘খুদি’ খেজুর বা বন খেজুর বলে। ভারত, পাকিস্তান, ভুটান ও বাংলাদেশ পৃথিবীর চারটি দেশ এই খেজুর গাছের আদিনিবাস। বর্তমানে বাংলাদেশের কোথাও আর এই খেজুর গাছটি নেই। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও দিনাজপুর বন বিভাগের কর্মকর্তারা এই গাছটি দেখতে এসেছিলেন এবং তারা এটি শনাক্ত করেছেন। বর্তমানে এটি বিলুপ্তির পথে। গাছগুলো যেন আর বিলুপ্তি না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই গাছ থেকে যে বীজ হচ্ছে তা থেকে আমাদের নার্সারিতে চারা উৎপাদন করার কাজ শুরু করেছি। এই ধর্মপুর শালবনে প্রায় দেড় শতাধিক খুদি খেজুর বা বন খেজুরের গাছ আমরা খুঁজে পেয়েছি। এর মধ্যে অনেকগুলোতে ফল ধরেছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থেও এই খুদি খেজুর গাছ ভূমিকা রাখবে।”

তিনি বলেন, “বিরল উপজেলার ২১টি মৌজায় ২ হাজার ৮৩৬ একর শালবনে শাল, সেগুন, কড়ইসহ শতাধিক প্রজাতির গাছ আছে। আর এখন নতুন করে যোগ হয়েছে খুদি খেজুর গাছ। বন বিভাগের উদ্যোগে এই গাছ বিলুপ্তি থেকে রক্ষা করা হবে।”

ঢাকা/মোসলেম/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়