নদীভাঙন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষায় মানববন্ধন
নদীভাঙন থেকে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর আট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষায় মানববন্ধন হয়েছে।
শনিবার (২৪ মে) বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া, মাসকাটা, কালাবাদর নদীভাঙন থেকে রক্ষা পেতে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা মানববন্ধন করে।
তীব্র নদীভাঙনের ফলে ইতোমধ্যে এই দ্বীপ উপজেলার তেরশ পরিবারসহ অনেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাজারসহ প্রায় ২ হাজার একর কৃষি জমি নদীর্গতে বিলীন হয়ে গেছে।
মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা রক্ষার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করছি। ইতোমধ্যে নদী ভাঙনের ফলে আমাদের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন যে কয়টি আছে তা যদি ভেঙে যায় তাহলে আমাদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ আমাদের পরিবারের শহরে গিয়ে লেখাপড়া করার মত সামর্থ্য নেই। তাই সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের আমাদের স্কুল রক্ষার বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি।
মানববন্ধনে লেংগুটিয়া মুসলিম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, “আমার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি অত্র এলাকায় ঐতিহ্যবাহী স্কুল। ৯৪ বছর ধরে এই অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করে আসছে। আমার প্রতিষ্ঠানে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী আছে। এখন এই প্রতিষ্ঠানটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। তাই সরকারকে কাছে আবেদন এই দ্বীপ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে শিক্ষার্থীদে শিক্ষা জীবনে যাতে কোন ধরনের সমস্যা না হয় সেই ব্যবস্থা করার।”
লেংগুটিয়া আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন নুরুনবী বলেন, “দ্বীপ উপজেলা মেহেন্দিগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দারা বৈষম্য শিকার। ২০০ বছরের পুরানো এই এলাকা দিন দিন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গেছে। এই বর্ষায় আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষায় জন্য অতিদ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের অনুরোধ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষা করুন।”
স্থানীয় বাসিন্দা ও যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, “আমাদের এই অঞ্চলের ২২ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার হুমকিতে রয়েছে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করার জন্য সরকারের অতিদ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল রাইজিংবিডিকে বলেন, “অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমরা নদীভাঙন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষায় চেষ্টা করব। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রকল্পের প্রয়োজন হয়। সরকারিভাবে প্রকল্প আসলে আমরা অতি দ্রুত কাজ শুরু করব।”
ঢাকা/রায়হান/সাইফ