দিনাজপুরে প্রস্তুত ৪ লাখ কোরবানির পশু
মোসলেম উদ্দিন, দিনাজপুর || রাইজিংবিডি.কম
এবার ছোট গরু প্রস্তুত করেছেন এখানকার খামারিরা।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দিনাজপুরে প্রস্তুত করা হয়েছে ৪ লাখ ৫ হাজার ৯৯১টি কোরবানির পশু। তবে চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৫টি পশুর।
জেলার গৃহস্থসহ ছোট-বড় খামারিরা এসব কোরবানির পশু প্রস্তুত করছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন হাটে এসব পশু তুলছেন তারা। তবে তারা বলছেন, অন্যান্য বারের চেয়ে এবার হাটে কোরবানির পশুর দাম অনেকটা কম।
জেলার বিভিন্ন গরুর খামার ঘুরে দেখা যায়, এবার প্রায় খামারেই বড় আকারের গরু নেই। অন্যান্য বছরে খামারিদের খামারে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা দামের বড় আকারের গরু ছিলো। এ বছরের চিত্র আলাদা। বর্তমান প্রায় খামারে সর্বনিম্ন ৯০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ দেড় থেকে দুই লাখ টাকা দামের গরু আছে।
জেলার বিভিন্ন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এসব খামারের দেখাশোনা এবং চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে।
বিরামপুর উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের গৃহস্থ কোরবান আলী বলেন, ‘‘বাড়িতে আমার দুইটি গাভী রয়েছে। গত দুই বছর আগে দুই গাভীর দুইটি আড়িয়া গরু হয়েছে। এই আড়িয়া গরু এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছে। বিরামপুর হাটে তুলেছিলাম, দাম অনেক কম বলছে ক্রেতারা। ১ লাখ ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা হলে বিক্রি করবো।’’
ঘোড়াঘাটের একজন গরু ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘হাট থেকে অল্প দামে গরু কিনে তা মোটাতাজা করে কোরবানির হাটে বিক্রি করি। এবার বাড়িতে তিনটি কোরবানির গরু প্রস্তুত করেছি। যদি দাম ভাল পাই তাহলে বিক্রি করবো।’’
হাকিমপুরে মিশর উদ্দিন সুজন নামের একজন খামারি বলেন, ‘‘গত ৫ বছর যাবৎ আমি এই খামার করেছি। গতবার দেশি-বিদেশি একশত'র উপরে গরু, মহিষ আর ছাগল ছিলো। এবার অনেকটা কম গরু আছে। এগুলো কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে দাম তেমন ভাল পাবো না, লাভ তেমন হবে না। গরুর খাদ্যের দাম বেশি। হাটে দামও হয়তো বেশি পাব না।’’
তিনি আর বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে খামারের কয়েকটি গরুতে লাম্পি রোগ হয়েছিল। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করে বর্তমান সব গরু সুস্থ আছে।’’
হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম বলেন, ‘‘হাকিমপুর উপজেলায় মোট গরু, মহিষ ও ছাগলের খামার রয়েছে ৩২০০টি। ঈদ উপলক্ষে ১৫ হাজার ৯৩৯টি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। তার মধ্যে চাহিদা রয়েছে ১৫ হাজার ২০০টির। চাহিদা ছাড়াও অতিরিক্ত রয়েছে ৭৩৯টি পশু। হাকিমপুরের চাহিদা পুরণ করেও বাকি কোরবানির পশুগুলো দেশের চাহিদা মেটাবে। আমরা সার্বক্ষণিক খামারিদের সুপরামর্শসহ সেবা দিয়ে আসছি।’’
দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ডিএলও) আব্দুল রহিম বলেন, ‘‘পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দিনাজপুর জেলায় মোট কোরবানির ৪ লাখ ৫ হাজার ৯৯১টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। চাহিদা আছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৫টি পশু। অবশিষ্ট রয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ১২৬টি পশু। এর মধ্যে ষাঁড় ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৯৩, বলদ ১৩ হাজার ৫১, গাভী ৩৫ হাজার ৫৩৬, গরু ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯, মহিষ ৫৭৭, ছাগল ২২ হাজার ৭৮৬ ও ভেড়া ২০ হাজার ৫৪৯টি। জেলায় মোট খামারের সংখ্যা ৬২ হাজার ১০৮ টি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এবার কোরবানির পশু জেলার চাহিদা পূরণ করেও অবশিষ্ট পশু দেশের চাহিদা পূরণ করবে।’’
ঢাকা/টিপু