ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

হাট কাঁপাতে প্রস্তুত সিরাজগঞ্জের বাবু-তুফান

অদিত্য রাসেল, সিরাজগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৬, ৩০ মে ২০২৫   আপডেট: ১০:৩৭, ৩০ মে ২০২৫
হাট কাঁপাতে প্রস্তুত সিরাজগঞ্জের বাবু-তুফান

কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে বাবু ও তুফানকে 

কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সিরাজগঞ্জে প্রস্তুত করা হয়েছে বাহমা ও শাহী আল জাতের দুটি ষাঁড়। হাটে তোলার আগেই জেলায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে সোহাগ বাবু ও তুফানে নামের বিশাল আকৃতির দুই ষাঁড়। 

শাহজাদপুর উপজেলার উল্টাডাব গ্রামের কৃষক আবু সাঈদ সরদারের খামারে সোহাগ বাবু ও কামারখন্দের ধলেশ্বর গ্রামের প্রবাসি মইনুল হকের খামারে তুফানকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। 

আরো পড়ুন:

বাবুর ওজন প্রায় ৮৮০ কেজি এবং তুফানের ওজন ৬৮০ কেজি। কোরবানি ঈদ সামনে রেখে সোহাগ বাবুর দাম হাঁকাচ্ছেন ৬ লাখ ৬০ হাজার এবং তুফানের দাম ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা।

ষাঁড় দুটিকে বড় করতে কোনো ধরনের স্টেরয়েড বা কৃত্রিম মোটাতাজাকরণ ওষুধ ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবি করেন মালিকরা। পুরোপুরি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে লালন-পালন করা হয়েছে। ষাঁড় দুটি স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশাল আকৃতির ষাঁড় দুটি দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা ও ব্যবসায়ীরা।

বাবুর ওজন প্রায় ৮৮০ কেজি। মালিক দাম চেয়েছেন সাড়ে ৬ লাখের বেশি।


কৃষক আবু সাঈদ সরদার বলেন, “২ বছর আগে শংকর জাতের একটি শাহীয়াল গাভি সাদাকালো ডোরাকাটা একটি বাছুর জন্ম দেয়। বাছুরটির আকার আকৃতি ও ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ও হৃষ্টপুষ্ট হওয়ায় আদর করে তার নাম রাখা হয় সোহাগ বাবু। গরুটিকে নিজ হাতে খাওয়ানো থেকে শুরু করে সবকিছুই করি। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলে বাবুর পরিচর্যা।”

স্থানীয়রা জানান, ১৩ বছর আগে প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে মাত্র ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি গাভি কিনে খামার শুরু করেন মইনুল। ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন একটি আধুনিক খামার। এখন তার খামারে রয়েছে ১২টি উন্নত জাতের ফ্রিজিয়াম, হোলস্টাইন, ফ্রিজিয়ান ও শাহী আল জাতের গরু। 

তুফান সম্পর্কে মইনুল হক বলেন, “আমার পরিশ্রম আর ভালোবাসার ফল তুফান। ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা পেলে তুফানকে ছাড়বো।” 

তিনি জানান, ষাঁড়টিকে বড় করতে কোনো ধরনের মোটাতাজাকরণ ওষুধ ব্যবহার করা হয়নি। তুফানকে প্রতিদিন খাওয়ানো হয় ঘাস, খৈল, ভুষি ও ছোলা জাতীয় প্রাকৃতিক খাদ্য। 

লোকমান হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, “তুফানকে দেখে আমার পছন্দ হয়েছে। সাধ্য অনুযায়ী দামও বলেছি, কিন্তু গরুর মালিক এ দামে বিক্রি করতে রাজি হননি। লাভ না হলে তো নিশ্চয় বিক্রি করবেন না।” 

তুফানের ওজন প্রায় ৭০০ কেজি। ৫ লাখের বেশি হলে তবেই বিক্রি করা হবে 


রাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. একে এম, আনোয়ারুল হক বলেন, “জেলায় এবার কোরবানি যোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৯০৪টি। স্থানীয় চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ২৪১টি। অবশিষ্ট ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৬৩টি পশু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যাবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।”

তিনি বলেন, “আশা করছি, জেলার ছোট-বড় সব খামারিরা গবাদিপশু ভালো দামে বিক্রির মাধ্যমে লাভবান হবেন। প্রাকৃতিক উপায়ে এ জেলার গরু ছাগল লালন-পালন করায় সারা দেশে এ অঞ্চলের গরু ছাগলের চাহিদা বেশি। অন্য জেলার ক্রেতারাও কোনো ঝামেলা ছাড়াই হাট থেকে গবাদিপশু ক্রয় করতে পারবেন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে থাকবে সার্বিক সহযোগিতা।”

ঢাকা/রাসেল/ইভা 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়