ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

৯ কিলোমিটার সড়কে সীমাহীন দুর্ভোগ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৫, ১৫ জুন ২০২৫   আপডেট: ১৩:২৩, ১৫ জুন ২০২৫
৯ কিলোমিটার সড়কে সীমাহীন দুর্ভোগ

সড়কের বেহাল দশা

ঝালকাঠি সদর উপজেলার সংগ্রামনীল পুলিশ বক্স থেকে সারেঙ্গল বাজার পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে খানাখন্দে তৈরি হয়ে চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় পুরো সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। কোথাও কোথাও পিচ উঠে গিয়ে মাটি বেরিয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে কাদা-পানিতে পরিণত হয় সেসব স্থান। এতে প্রতিনিয়ত এই সড়ক দিয়ে চলচলকারীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, সড়কটির আইডি নম্বর ৫৪২৪৩০১১। ২০০১-২০০২ অর্থবছরে আরডিপি-১৯ প্রকল্পের আওতায় সড়কের প্রথম চার কিলোমিটার নির্মাণ করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে আরও কিছু অংশ নির্মাণ হলেও সর্বশেষ ২০১৮ সালে জিওবি মেইনটেনেন্স প্রকল্পে মাত্র এক কিলোমিটার সংস্কার করা হয়। তারপর থেকে আর কোনো সংস্কার কাজ হয়নি।

বেহাল এই সড়ক দিয়ে একটি ইউনিয়ন পরিষদ, একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন যাতায়াত করেন। বর্ষা মৌসুমে এই দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে।

সারেঙ্গল এলাকায় বাসিন্দা মো. রেজা জানান, সংগ্রামনীল থেকে সারেঙ্গল বাজার পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার রাস্তা খানাখন্দ ও ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। এই সড়কে একটি ঝুঁকিপূর্ণ কালভার্ট রয়েছে। যার উপর বর্তমানে কাঠের পাটাতন দেওয়া রয়েছে। এই স্থানে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

তারুলী গ্রামের বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম রাসেল বলেন, “সড়কে একটি কালভার্ট রয়েছে যা এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে, এর ওপর দিয়ে স্বাভাবিকভাবে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। স্থানীয়দের সহায়তায় আমরা মোটা কাঠের তক্তা দিয়ে অস্থায়ীভাবে ব্যবস্থা করেছি, যেন বড় কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।”

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সালাউদ্দিন সোহাগ বলেন, “স্কুলগামী শিশুদের সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়। কেউ পড়ে গিয়ে আহত হয়, কেউ আবার ভিজে স্কুলে আসে। এই সড়ক শুধু সংস্কার করলেই হবে না, পুনঃনির্মাণ করতে হবে।”

ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক শাহাজাহান মুন্সী বলেন, “কোরবানি ঈদের আগের দিন আমি এই রাস্তায় যাত্রী নিয়ে এসে দুর্ঘটনায় পড়ি। গাড়িতে থাকা বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছে। অল্পের জন্য এই যাত্রায় বেঁচে গেছি। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার না করা হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”

এ বিষয়ে ৪নং কেওড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হেমায়েত উদ্দিন হিমু বলেন, “বিষয়টি আমরা বহুবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এই সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার। আশা করছি, দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

ঝালকাঠি এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী শিপলু কর্মকার বলেন, “সড়কটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন পেলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে।”

ঢাকা/অলোক/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়