ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বাগমারার নিমাই বিলে ফের পুকুর খনন, ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ২২ জুন ২০২৫  
বাগমারার নিমাই বিলে ফের পুকুর খনন, ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

পুকুর খনন বন্ধে সংবাদ সম্মেলন

কিছুদিন বন্ধ থাকার পর ফের রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নিমাই বিলের কৃষি জমিতে জোর জবরদস্তিতে পুকুরখনন শুরু হয়েছে। এই অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে শনিবার (২১ জুন) সংবাদ সম্মেলন করেছে রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলন, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম ও সবুজ সংহতি, রাজশাহী মহানগর। 

এদিন বেলা ১১টায় নগরের গণকপাড়ার একটি ক্যাফেতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের বাগমারা উপজেলার আহ্বায়ক প্রভাষক আমজাদ হোসেন। 

এসময় নদী ও পরিবেশ গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, জুলাই-৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী, আইনজীবি হোসেন আলী পিয়ারা, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, ভুক্তভোগী ঈশিতা ইয়াসমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিমাই বিলের কৃষিজমিতে জোর জবরদস্তি অবৈধ পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। কৃষি জমি রক্ষায় এ বিষয়টি নিয়ে ৪-৫ মাস যাবৎ প্রশাসনের দৃষ্টিতে আনার জন্য মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এর পরেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে গত ১৯ মার্চ আদালতে একটি মামলা করা হয়। বাগমারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামলাটির তদন্ত করছেন। 

এ বিষয়ে কোন অগ্রগতি না হলে গত ৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট করা হয়। উচ্চ আদালত বাগমারা উপজেলায় পুকুর খননে স্থগিতাদেশসহ জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও এসি-ল্যান্ডকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে নির্দেশনা দিয়েছেন।

এরই মধ্যে সম্প্রতি এই পুকুর খনন নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে কিছু দিনের জন্য কাজ বন্ধ হয়। কিন্তু এখন আবার পুকুর খনন শুরু হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আসামিরা আইন, উচ্চ আদালতের রিট পিটিশনসহ সকল কিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় নিমাই বিলের প্রায় ৬০ বিঘা কৃষি জমিতে ঈদের ছুটিতে আবারো জোরেশোরে খনন শুরু করেছে। কতিপয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও ভূমিদস্যুরা এই কাজের সঙ্গে জড়িত।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাত ১১টার পর থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ৭টি স্কেভেটর মেশিন দিয়ে খনন কাজ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পুকুর খেকোরা। বাগমারা থানা, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বরং নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন তারা। অবৈধ খননের কারণে কৃষকদের আবাদ নষ্ট হয়েছে এবং জমি আবাদের অনুপযোগী হওয়ায় কৃষকরা অনিশ্চিত ভবিষতের মধ্যে পড়েছেন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে ৫ দফা দাবি জানানো হয়েছে। এগুলো হলো- অবিলম্বে কৃষি জমিতে পুকুর খনন বন্ধে দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, চিহ্নিত ভূমিদস্যুদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, পুকুর খননে সহতায়তাকারী পুলিশ কর্মকর্তা, এসি-ল্যান্ড, ইউএনওকে অপসারণসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করা; জোরপূর্বক পুকুর খনন করতে গিয়ে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে তার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা এবং সমগ্র ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত কর ও রাজশহীর বিভিন্ন উপজেলায় কৃষি জমিতে পুকুর খননের যে মহোৎসব চলছে তা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বন্ধ করা।

এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিমাই বিলে পুকুর খনন বন্ধ করতে ঈদের আগে আমি অন্তত সাতবার গিয়েছি। এসি-ল্যান্ড তিন-চারবার গেছেন। তখন পুকুর খনন বন্ধ হয়েছিল। তারপর ঈদের ছুটিতে দুইদিন কাজ চলেছে। আমি খবর পেয়ে পরে গিয়ে আর পাইনি। এখন রাতে যদি রাতে পুকুর কাটে, তাহলে তখন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে।’’

ঢাকা/কেয়া/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়