মাসুদ রুমী সেতুর টোল আদায় বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর সৈয়দ মাসুদ রুমী সেতুতে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।
রবিবার (২৯ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সেতুর টোলপ্লাজা এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সেতুর দুই পাশে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চালক ও যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ইউএনও এস এম মিকাইল ইসলাম, জেলা সড়ক ও জনপথের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরে ইউএনও ও সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, টোলপ্লাজা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছেন আন্দোলনকারীরা। এক পর্যায়ে টোলপ্লাজার দুই দিকে ৮-১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এ সময় যাত্রীরা অনেকেই গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে সেতু এলাকা পার হন।
খালেদা খাতুন নামের এক পথচারী জানান, সড়ক বন্ধ করে অবরোধ চলছে। তিনি এক ঘণ্টা গাড়িতে বসেছিলেন। অফিসের সময় হওয়ায় হেঁটেই সেতু পার হচ্ছেন।
রাজু আহমেদ নামের অপর এক পথচারীর ভাষ্য, দীর্ঘ সময় ধরে সড়ক অবরোধে জনগণের বেশ ভোগান্তি হচ্ছে। তবুও একদিনের ভোগান্তির বিনিময়ে স্থায়ীভাবে সেতুর টোল আদায় বন্ধ চান তিনি।
কুমারখালী নাগরিক কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য কে এম আর শাহীন বলেন, সেতুর নির্মাণ ব্যয় অনেক আগে উঠে গেছে। সরকারি আমলারা টোলের নামে চাঁদাবাজি করার পাঁয়তারা করছেন।
উপজেলা জামায়েতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন বলেন, টোলের নামে জনগণের আর পকেট কাটতে দেওয়া হবে না।
সওজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের গড়াই নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করে সওজ। গত বছর আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর টোল আদায় বন্ধের দাবিতে টোলপ্লাজায় আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এর পর ১৩ আগস্ট সওজ কর্তৃপক্ষ টোল আদায় করতে গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা বাধা দেয়। এরপর থেকে সেতুতে টোল আদায় বন্ধ রয়েছে। এতে প্রতিদিন ৩-৪ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
টোল আদায় বন্ধ থাকায় সরকার ইতোমধ্যে প্রায় ১১ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম। তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের দাবির কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দু-দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলাইমান শেখ বলেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে প্রশাসনের ফলপ্রসূ আলোচনা হলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
কুমারখালী ইউএনও এসএম মিকাইল ইসলাম জানান, বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসক ও সওজ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল