ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

‘কেএমপি কমিশনারের পতদ্যাগ দাবির যৌক্তিকতা নেই’ 

নিজস্ব প্রতিবেদক,  খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২৯, ৩০ জুন ২০২৫  
‘কেএমপি কমিশনারের পতদ্যাগ দাবির যৌক্তিকতা নেই’ 

খুলনা প্রেস ক্লাবে  আট সংগঠনের পক্ষে বক্তব্য রাখছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আব্দুল্লাহ-আল সাফিন

পুলিশের এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেয়ার কারণে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের পতদ্যাগ এবং মেলা ইস্যুতে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই বলে উল্লেখ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতৃত্বাধীন আটটি সংগঠন। 

তারা জানান, যেহেতু এসআই সুকান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেহেতু এখন আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই। উল্লিখিত ইস্যুতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততাও নেই। কেউ ব্যক্তি স্বার্থে বা কোনো ব্যানারে অনৈতিক কিছু করলে তার দায়ভার তারা নেবে না বরং আইনের আওতায় নেয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা। 

আরো পড়ুন:

আজ সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে  আট সংগঠনের যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একাংশের নেতারা, রেড জুলাই, জুলাই রেভ্যুলেশনারী এলায়েন্স, জাস্টিস ফর জুলাই, ইনকিলাব মঞ্চ, আপ বাংলাদেশ, রঙমশাল ও পুসাবের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চোখ হারানো আব্দুল্লাহ-আল সাফিন।

গত ২৪ জুন বিকেলে একাধিক মামলার আসামি পুলিশের এসআই সুকান্তকে আটক করে খানজাহান আলী থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করে ছাত্র-জনতা। রাতেই থানা থেকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গত ২৫ ও ২৬ জুন কেএমপির সদর দপ্তর ঘেরাও করে পুলিশ কমিশনারসহ অন্য কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। তবে এসআই সুকান্তকে গত ২৬ জুন চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানোর পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশ কর্মসূচিতে যোগদান থেকে বিরত থাকে। 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অপর অংশ ছাত্র-জনতার ব্যানারে পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারের অপসারণ দাবি করে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে গত ২৬ জুন রাতে বিক্ষোভকারীরা কর্মসূচি স্থগিত রেখে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন তারা। পুলিশ কমিশনারকে অপসারণ না করায় গত ২৮ জুন বেলা আড়াইটা থেকে ‘ব্লকেড কর্মসূচি’ শুরু করেন। ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের মুখপাত্র সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি ফের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

লিখিত বক্তব্যে আব্দুল্লাহ-আল সাফিন বলেন, ‘‘এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় আমরা আন্দোলনে সরব হই। পরে তাকে চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তারের পর আন্দোলন সফল হওয়ায় আমরা আন্দোলন থেকে সরে আসি। আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছি, এখানো আমাদের গুটিকয়েক সহযোদ্ধাদের ব্যবহার করে একটি বিশেষ মহল ওই আন্দোলন ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। যার দায়ভার কোনোভাবেই জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতা নেবে না।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা জুলাইকে ব্যবহার করে এমন কোন কাজ করব না, যা জুলাই আন্দোলনকে বিতর্কিত করে। আর কেউ এমন কাজ করতে চাইলে আমরা তাদের প্রতিহত করব।’’

এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল্লাহ-আল সাফিন বলেন, ‘‘জুলাই কর্মসূচির সঙ্গে মেলার যৌক্তিকতা নেই। যারা মেলার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন, তাদের সঙ্গে আমাদের সর্ম্পকও নেই।’’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতারা চাচ্ছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষে খুলনা শহরের শিববাড়ি মোড়ের জিয়াহল চত্বরে ৩৬ দিন মেলা আয়োজন করতে।  

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল্লাহ-আল সাফিন বলেন, ‘‘একটি স্বার্থান্বেষী মহল দৃষ্টিভঙ্গি অন্যত্র ঘুরিয়ে দিতে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে সরব। এরপর দেখা যাবে, এসআই সুকান্ত ইস্যু বাদ দিয়ে অন্য কোনো কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবিতে ওই মহলটি সরব হচ্ছে।’’

সংবাদ সম্মেলনে জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আগামীকাল ১ জুলাই থেকে এ কর্মসূচি শুরু হবে। 
 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়