রাইজিংবিডিতে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সেই মুসাকে শোকজ
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
একসাথে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত শিক্ষক মহম্মদ মুসা করিম (ইনসেটে)
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে একইসঙ্গে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে বেতন-ভাতা উত্তোলনের ঘটনায় শিক্ষক মহম্মদ মুসা করিমকে শোকজ করা হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হকের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে শোকজ করা হয়।
আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এর আগে ‘একসঙ্গে বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষক, বেতন-ভাতাও তুলেছেন মুসা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি ডটকম।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মুসা করিম চাকরি করেন একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে। অথচ ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি না ছেড়ে যোগদান করেন মাদ্রাসায়। এভাবে দুই প্রতিষ্ঠান থেকেই বেতন-ভাতা তুলেছেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, নিয়োগ প্রক্রিয়া ছাড়াই এক নারীকে অফিস সহকারী হিসেবে শিক্ষা অধিদপ্তরের ব্যানবেইসে নাম দিয়েছেন ওই শিক্ষক।
মুসা করিম কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়া নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নে অবস্থিত।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৩ সালে নন-এমপিও কুমারখালীর চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন মহম্মদ মুসা করিম। এরপর ২০১৫ সালে একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।
এখানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ থাকা অবস্থায় ২০২২ সালে এনটিআরসিএ কর্তৃক সহকারী শিক্ষক (গণিত) পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। যার ইনডেক্স নম্বর-এম ০০২৭৩৯৫। এনটিআরসিএ নিয়োগ নিয়ে তিনি ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার গাড়াবাড়িয়া সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসায় যোগদান করেন।
ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ওই বছরের মে ও জুন মাসের বেতন উত্তোলন করেন তিনি। এরপর শারীরিক অসুস্থতা ও প্রতিষ্ঠানের দূরত্ব উল্লেখ করে ২০২২ সালের ৩০ জুন ওই মাদ্রাসা থেকে পদত্যাগ করেন মুসা।
আরও জানা গেছে, ২০২২ সালের ৬ জুলাই ছেঁউড়িয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। সেসময় থেকে তিনি বিদ্যালয়টিতে নিয়মিত উপস্থিত হন। তবে অবৈধভাবে অতিরিক্ত বকেয়া বেতন তোলার জন্য ভুয়া রেজুলেশন করে অত্র বিদ্যালয়টিতে ২০০৩ সাল তার নিয়োগ দেখানো হচ্ছে। যা শিক্ষা অধিদপ্তরের ব্যানবেইসে নেই।
এছাড়া নিয়োগপত্র ছাড়াই মোটা অংকের ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে প্রিয়া সুলতানা নামের এক নারীকে অফিস সহায়ক হিসেবে নাম দিয়ে রেখেছেন তিনি।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে ফোনে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মুসা করিম বলেন, “শোকজের বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। শোকজের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করব।”
ঢাকা/কাঞ্চন/এস