২ খাদ্য কর্মকর্তাকে হেনস্তার অভিযোগ, বিএনপি নেতা বহিষ্কার
রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ডিএম শাফিকুল ইসলাম শাফি
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ডিএম শাফিকুল ইসলাম শাফিকে দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নবী নওয়াজেস আমিন ও খাদ্য পরিদর্শক আমিরুল ইসলামকে হেনস্তা এবং এক সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
সোমবার (১৮ আগস্ট) রাতে জেলা বিএনপির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার ও যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল বিজ্ঞপ্তিতে সই করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শাফিকুল ইসলাম শাফিকে আউচপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো।
শাফিকুল ইসলাম আউচপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। তার ভাই ডিএম জিয়াউর রহমান জিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক। আওয়ামী সরকারের পতনের পর এ দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস সৃষ্টি, চাঁদাবাজি, সরকারি দপ্তরগুলোতে খবরদারি ও ক্যাডার লালনের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে আউচপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শাফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তার ১৫-২০ জন অনুসারী বাগমারা উপজেলা পরিষদে যান। চেয়ারম্যান শাফিকুল উপজেলা পরিষদের দোতলায় একটি কক্ষে অবস্থান করেন। তার অনুসারীরা চারতলায় উঠে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নবী নওয়াজেস আমিনের কক্ষে যান। তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের দাবি জানান।
খাদ্য নিয়ন্ত্রক পরিস্থিতি বেগতিক দেখে একই তলায় অবস্থিত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার তরিকুল ইসলামের কক্ষে আশ্রয় নেন। পেছন পেছন চেয়ারম্যানের অনুসারীরাও প্রকল্প কর্মকর্তার কক্ষে গিয়ে খাদ্য কর্মকর্তাকে ঘিরে ধরেন। একপর্যায়ে চেয়ারম্যানের অনুসারী বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে খাদ্য নিয়ন্ত্রককে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় পাশের কক্ষে থাকা খাদ্য পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম খাদ্য নিয়ন্ত্রককে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে যান। সেখানে থাকা চেয়রাম্যানের লোকজন আমিরুল ইসলামের গলা টিপে ধরেন।
এ সময় একটি জাতীয় পত্রিকার বাগমারা প্রতিনিধি মামুনুর রশিদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হামলার ভিডিও ধারণ করতে গেলে তার মোবাইল কেড়ে নেন হামলাকারীরা। কিছুক্ষণ পর চেয়ারম্যান শাফিকুল ঘটনাস্থলে পৌঁছে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের ওপর চড়াও হন এবং অশ্লীল ভাষায় তাকে গালাগাল করেন। পরে তিনি তার অনুসারীদের কাছে থাকা সাংবাদিকের মোবাইল ফোন ফেরত দেন।
অভিযোগের বিষয়ে ডিএম শাফিকুল ইসলাম বলেন, “গতকালের ঘটনায় আমার কোনো সম্পৃক্ততাই নাই। কিছু লোক খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে অনিয়মের প্রতিবাদ করতে সেখানে গিয়েছিলেন। তখন খাদ্য কর্মকর্তা আমাকে ডাকেন। আমি কাউকে লাঞ্ছিত করিনি। তারপরও আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে চিঠি দেখেছি।”
এ বিষয়ে কথা বলতে ডিএম শাফিকুল ইসলামের ভাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডিএম জিয়াউর রহমান জিয়াকে ফোন করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ