ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সংস্কারহীন দুই কিলোমিটার সড়ক, ২০ বছরের ভোগান্তি 

জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৮, ২০ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১১:২৯, ২০ আগস্ট ২০২৫
সংস্কারহীন দুই কিলোমিটার সড়ক, ২০ বছরের ভোগান্তি 

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বলড়া ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকার দুই কিলোমিটার রাস্তা যেন দুর্ভোগের নাম। প্রায় দুই দশক ধরে সংস্কারহীন এই পথ খানাখন্দে ভরে গেছে। বৃষ্টি হলে কাদা-জলের কারণে যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটে যাতায়াত করা কষ্টকর হয়ে পড়ে এলাকাবাসীর জন্য। তাদের অভিযোগ, রাস্তাটি ভেতরের দিকে হওয়ায় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের নজরে আসে না। 

এলাকাবাসী জানান, ২০ বছর আগে দুই কিলোমিটার এই রাস্তার কিছু অংশে পিচ ঢালাই এবং অধিকাংশ অংশ ইট সোলিং করা হয়েছিল। এরপর রাস্তাটির আর সংস্কার হয়নি। সময়ের সঙ্গে পিচ ঢালাই করা অংশ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে, ইটগুলো ভেঙে গর্তে পরিণত হয়েছে। অনেক জায়গায় অর্ধেক রাস্তা ধসে সরু হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও রাস্তার মাটি উঠে গেছে। ফলে পুরো পথটাই এখন দীর্ঘ ভোগান্তির প্রতিচ্ছবি।

আরো পড়ুন:

সামান্য বৃষ্টি হলেই সুলতানপুর থেকে খাবাসপুর হাইস্কুল পর্যন্ত রাস্তা কাদায় মিশে যায়। স্কুলগামী শিশুরা কাঁধে ব্যাগ নিয়ে কাদা মাড়িয়ে স্কুলের দিকে যায়। প্রবীণরা লাঠিতে ভর দিয়ে কোনো রকমে চলেন। রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চলাচল করতে না পারায় কৃষকেরা মাথায় বা কাঁধে তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে চলাচল করেন। 

সাতটি গ্রামের- সুলতানপুর, করিমকান্দি, বহলাতলী, আদাশুরি, বালিরটেক ও খাবাসপুরের একাংশের মানুষ প্রতিদিন এই পথে চলাফেরা করেন। বৃষ্টির দিনে এই রাস্তা ব্যবহার করে বাড়ি ফেরা যেন যুদ্ধের শামিল হয়ে যায় বলে জানান তারা।

স্থানীয় কৃষক আব্দুল করিম বলেন, “ধান কাটার মৌসুমে ফসল বাজারে নিতে পারি না। ভাঙা রাস্তায় গাড়ি ঢুকতে চায় না। আমাদের উৎপাদিত ধান কিংবা সবজি ঘরে থেকে নষ্ট হয়ে যায়।”

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘দিন যত গড়াচ্ছে, রাস্তা আরো বেশি ধসে পড়ছে। এই দুই কিলোমিটার পথ সাত গ্রামের মানুষের শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সংযোগ। শিক্ষা, চিকিৎসা, বাজার—সব কিছুর সঙ্গে এই রাস্তার যোগসূত্র। মানুষের প্রশ্ন একটাই, কবে মিলবে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি?” 

বালিরটেক বাজারের ব্যবসায়ী শাজাহান দেওয়ান বলেন, “কতবার দাবি জানিয়েছি সংস্কারের জন্য, কিন্তু কেউ শোনেন না। বৃষ্টি হলে দোকানে আসতে ক্রেতারাও কষ্ট পান। স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা অনেক কষ্টে চলাফেরা করে।”

বলড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হোসনে আরা বলেন, “আমি ডিসেম্বর থেকে দায়িত্ব নিয়েছি। রাস্তার অবস্থা খারাপ। আগের চেয়ারম্যান বলেছিলেন, এমপি কোটায় প্রকল্প দেওয়া আছে। কিন্তু এরপর কোনো পদক্ষেপ হয়নি।”

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কোহিনুর আক্তার বলেন, “খোঁজ খবর নিয়ে সড়কটি চলাচলের উপযোগী করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়