ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ভিক্ষুকদের টাকা নিয়ে উধাও সমাজসেবা কর্মকর্তা

নেত্রকোণা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৭, ২১ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১৪:২৪, ২২ আগস্ট ২০২৫
ভিক্ষুকদের টাকা নিয়ে উধাও সমাজসেবা কর্মকর্তা

মোজাম্মেল হক। ফাইল ফটো

ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পসহ দুঃস্থদের ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নিয়ে নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক পালিয়ে গেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, অফিস স্টাফ ও উপজেলার অন্যান্য কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও তিনি কয়েক লাখ টাকা ধার নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাহ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত ২৮ জুলাই থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।

এর আগে, সমাজসেবা কার্যালয়ের ব্যাংক হিসেবে থাকা দুঃস্থদের ঋণ কার্যক্রম ও বিভিন্ন ভাতার ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করে হাতিয়ে নেন মোজাম্মেল হক। ঘটনা জানাজানি হলে এ বিষয় তদন্তের উদ্যোগ নেন জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা।

তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় দুর্গাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাসুল তালুকদারকে। তদন্তে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। গত ১৪ আগস্ট তিনি এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জেলা কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন।

মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয় ও তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, সমাজসেবা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তির ৪ লাখ ৭৫ হাজার, মাতৃকেন্দ্রের ঋণ কর্মসূচির ৫ লাখ ১৩ হাজার, ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের ১ লাখ ৪০ হাজার ও ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের ২২ লাখ ৪৭ হাজারসহ মোট ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা একজন কর্মচারীর স্বাক্ষর জাল করে উত্তোলন করে নিয়ে যান। এছাড়া, অফিস স্টাফদের থেকে হাওলাদ বাবদ দুই লাখ ও উপজেলার বিভিন্ন কর্মকর্তাদের থেকে মায়ের অসুখসহ নানা অজুহাতে আরো কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের কয়েকজন স্টাফ জানিয়েছেন, একজন কর্মকর্তা এমন করবেন ভাবেননি। তাদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা করে নিয়েছেন।

উপজেলার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘‘একজন সমাজসেবা কর্মকর্তা পরিবারের কারো অসুস্থতার কথা বলে টাকা হাওলাদ চাইলে কে না দিবে বলেন। আমিও কয়েক হাজার টাকা দিয়েছি। পালিয়ে যাওয়ার পর অনেক কর্মকর্তাই বলছেন, তাদের কাছ থেকে একইভাবে টাকা হাওলাদ নিয়েছেন মোজাম্মেল। এর পরিমাণ কয়েক লাখ হবে। অনেকে আবার মান-সম্মানের ভয়ে বলতে চাইছেন না।’’

অফিস সহকারী নিজামুল আজাদ বলেন, ‘‘গত ২৭ মোজাম্মেল স্যার জুলাই শেষ অফিস করেছেন। তারপর থেকে আর অফিসে আসেননি। তার মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।’’

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাহ আলম বলেন, ‘‘স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হয়েছে। তদন্তে মোজাম্মেল হক ৩৩ লাখ টাকার বেশি অবৈধভাবে অফিসের ব্যাংক হিসেব থেকে উত্তোলন করেছেন বলে প্রমাণ মিলেছে। তদন্ত প্রতিবেদন অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হবে।’’

এ বিষয়ে জানতে মোজাম্মেল হকের মোবাইলে ব্যবহৃত নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।

২০২৪ সালের মে মাসে মোহনগঞ্জ উপজেলায় সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসবে যোগদান করেন মোজাম্মেল হক। এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে।

ঢাকা/ইবাদ/রাজীব

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়