শিবচরে শত কোটির সেতু নির্মাণে অনিশ্চয়তা
মাদারীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
আড়িয়াল খাঁ নদের উপর নির্মাণাধীন কলাতলা-নিলখী সেতু
মাদারীপুরের শিবচরে আড়িয়াল খাঁ নদের উপর নির্মাণাধীন কলাতলা-নিলখী সেতুর ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য সেতুর কাজ সম্পন্ন হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সেতুর ৩৫ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হলেও জমি অধিগ্রহণের টাকা পাননি স্থানীয় জমির মালিকরা। এ কারণে সেতুর চরকামার কান্দি প্রান্তের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় জমির মালিকরা। তবে, অপর প্রান্তের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, নিজেদের জমির ন্যায্য ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হলে, কাঙ্খিত সময়ে সেতুর কাজ সম্পন্ন হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে ৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৭০ মিটার দীর্ঘ ও ৯.৮৩ মিটার প্রস্থের এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর। ২০২৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাদের জমি অধিগ্রহণ করে ৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার পরেও তারা ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝে পাননি। এর প্রতিবাদে তারা কলাতলা চরকামার কান্দি প্রান্তের সেতুর কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
নির্মাণাধীন এই সেতুটি আড়িয়াল খাঁ নদের দুই প্রান্তে কলাতলা ও নিলখীকে সংযুক্ত করবে, যা এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেতুটি নির্মিত হলে মাদারীপুর জেলার শিবচর ও রাজৈর উপজেলার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত সহজ হবে। রাজৈর, টেকেরহাট বন্দর এবং গোপালগঞ্জের মকসুদপুর থেকে শিবচরে প্রবেশের পথ প্রায় ৫০ কিলোমিটার কমে আসবে।
এ বিষয়ে এলজিইডির প্রকৌশলী কে.এম. রেজাউল করিম জানান, সেতুর কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। আপাতত একপাশের কাজ বন্ধ থাকলেও, অপর পাশের কাজ চলমান আছে।
ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, “ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি আমরা বলতে পারব না। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। জমি অধিগ্রহণের জটিলতার বিষয়টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ই বলতে পারবে।”
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, “সংশয়ের কিছুই নেই। আমরা প্রতিনিয়তই কাজ করছি। ওখানে (আড়িয়াল খাঁ নদের সেতু প্রান্তে) কিছু জায়গা নদীর রয়েছে। যে-কারণে অধিগ্রহণের কাজ কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে। আমরা কাগজপত্র ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে একটা সিদ্ধান্ত এলেই আমরা অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা শেষ করে স্থানীয়দের নিয়ে বিষয়টি সমাধান করব। যারা ক্ষতিগ্রস্ত সকলেই ক্ষতিপূরণ পাবেন।”
ঢাকা/বেলাল/এস