দিনাজপুরে সবজির বাজারে আগুন
দিনাজপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
দিনাজপুরের হাট-বাজারে সবজির অিগ্নিমূল্যে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। বর্ষায় এই অঞ্চলের সবজির ক্ষেতের ক্ষতি এবং সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে তার প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (২৩ আগস্ট) জেলার হিলি ও বিরামপুর উপজেলার বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানান, বর্ষার আগে বেগুন ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল, দাম বেড়ে এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে। ২০ টাকার পটল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। এছাড়া, ২৫ টাকার ঢেঁড়স ৫০ টাকা, ৩০ টাকার করলা ৮০ টাকা, ১০ টাকার আলু ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
কাঁকরোলের দাম ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা কেজি হয়েছে। ২৫ টাকার মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, ৩০ টাকার পেঁয়াজ ৭০ টাকা, ৩০ টাকার কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজিতে।
বাজারে পেঁপে ২০ টাকা, কচু ৩০ টাকা, শিম ২০০ টাকা, সজনে ডাঁটা ১৬০ টাকা এবং গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে।
হিলি বাজারে সবজি কিনতে আসা রিকশাচালক লুৎফর রহমান বলেন, “সংসারে ছয়জন লোক। চালের কেজি ৭০ টাকা। দিনে লাগে দুই কেজি চাল। দিনে উপার্জন হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এর মধ্যে সবজির দাম বেড়েছে। এখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।”
বিরামপুর সবজি বাজারে কথা হয় রফিকুল ইসলাম নামে এক দিনমজুরের সঙ্গে। তিনি বলেন, “হারা গরিব মানুষ, হামার চিন্তার শেষ নাই, সকাল হলেই সংসারের খরচের বোঝা ঘাড়ে ওঠে। বাজারত যে জিনিস পাতির দাম, চোখ কপালে উঠে। সব তরকারির দাম ৫০ টাকার উপরে। যা কামাই হয় তা দিয়ে কিছুই হয় না। বাজারে আসলে ভয় লাগে।”
হিলি বাজারের সবজি দোকানি আব্দুল লতিফ বলেন, “টানা বর্ষায় ক্ষেতের সব ধরনের সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। বাজারে আমদানি একেবারে কমে গেছে, কিন্তু চাহিদা বেশি। যে কারণে প্রতিটি সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী। মোকামেও মিলছে না সব সবজি। বর্ষা শেষ হলে সবজির উৎপাদন বাড়বে, তখন দামও নাগালের মধ্যে আসবে।”
বিরামপুর উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের সবজি চাষি মোকারম হোসেন বলেন, “আমার তিন বিঘা জমিতে সারা বছর বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করি। টানা বর্ষায় সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এর মধ্যে যা পাই তাই হাটে নিয়ে বিক্রি করি, দাম ভাল পাচ্ছি।”
ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ