ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

খাগড়াছড়িতে কৃষি জমিতে গৃহায়ন, বিপাকে বর্গা চাষীরা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ২৩ আগস্ট ২০২৫  
খাগড়াছড়িতে কৃষি জমিতে গৃহায়ন, বিপাকে বর্গা চাষীরা

পার্বত্য এলাকার মানুষ একসময় উচু টিলা বা পাহাড়ে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করতেন। কিন্তু এখন সমতল ভূমিতে বিশেষ করে কৃষি জমিতে ঘর নির্মাণ করছেন তারা। এতে খাগড়াছড়িতে দিন দিন কমে যাচ্ছে কৃষি জমি।

বিশেষ করে শহরাঞ্চলে এর প্রভাবটা বেশি। এক সময় খাগড়াছড়ি শহরের পানখাইয়া পাড়া বিল বা মাঠে কোন বাড়িঘর ছিল না। পুরো বিলে ধান চাষ করতেন জমির মালিকরা। অনেক ক্ষেত্রে মালিকরা চাষ না করলেও বর্গা চাষীদের কাছে বর্গা দিয়ে চাষ করা হত, উৎপাদন হত হাজার হাজার টন ধান। এখন সেই বিলে দেখা যায় উচু উচু দালান।

এ দৃশ্য শুধু পানখাইয়া পাড়া বিল নয়, সদরের গোলাবাড়ী, খবং পুড়িয়া, স্বনির্ভর এলাকা, ঠাকুরছড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়। এ দালান শুধু ব্যাক্তিগত নয়, বিভিন্ন সরকারি স্থাপনাও রয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে খাগড়াছড়িতে চাষ যোগ্য জমির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।

পানখাইয়া পাড়া গ্রামের কৃষক থুইহ্লাপ্রু মারমা ও রামপ্রু মারমা বলেন, “এই পান খাইয়া বিলে আগে কোনো ঘরবাড়ি ছিল না। এখন প্রায় বিলের অর্ধেক জুড়ে ঘর। আগে পরে এখনে আর কোনো ধানি জমি থাকবে না।”

গোলাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মংপ্রু মারমা বলেন, “এখানে আগে কোনো ধানি জমিতে ঘরবাড়ি ছিল না, মহিলা কলেজ ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হওয়ার পর প্রায় সব ধানি জমিতে বাড়িঘর হয়ে গেছে।”

স্বনির্ভর এলাকার সুশীল চাকমা বলেন, “আমাদের এলাকায় এখন ধানি জমি নেই বললে চলে। অধিকাংশ জমিতে মানুষজন ঘরবাড়ি তুলেছে। জমি না থাকলে, ধান চাষ না হলে মানুষ খাবে কি? এভাবে চলতে থাকলে কৃষকদের একসময় না খেয়ে থাকতে হবে, বিশেষ করে বর্গা চাষীদের।”

এ নিয়ে খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. বাছিরুল আলম বলেন, “কৃষি জমিতে ইমারত তৈরি করতে হলে কৃষি বিভাগের অনুমতি লাগে। আর এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে অনেকে অনুমতি না নিয়ে ইমরাত তৈরি করেছেন, এটা তারা অপরাধ করেছেন।”

তিনি বলেন, “কৃষি জমিতে যাতে আর কেউ ঘরবাড়ি না তোলে, সেজন্য একটা সরকারি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সামনের পার্বত্য জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের মাসিক সমন্বয় সভায় আমি বিষয়টি উত্তাপন করব।”

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, “কৃষি জমিতে ঘরবাড়ি নির্মাণ না করার জন্য নিরুসাহিত করে জমিগুলো রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ঢাকা/রূপায়ন/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়