ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

শালবনে আকাশছোঁয়া গিলালতা দেখতে পর্যটকের ভিড়

দিনাজপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৪, ২৭ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১৫:৩৬, ২৭ আগস্ট ২০২৫
শালবনে আকাশছোঁয়া গিলালতা দেখতে পর্যটকের ভিড়

গিলালতা দেখতে মানুষের ভিড়

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নে জোতমাধব গ্রামের শালবনে ছড়িয়ে আছে প্রকৃতির এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। মাটি থেকে শুরু করে চারটি লতা পেঁচিয়ে উঠে গেছে শালগাছের শীর্ষে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন আকাশে ওঠার সবুজ সিঁড়ি। শালবনের ভেতরে প্রবেশ করলে চোখে পড়ে এ লতার অপূর্ব বিস্তার। অনেকেই লতায় বসে ছবি তুলছেন।

এই গিলালতা গাছ শিম পরিবারের উদ্ভিদ, যা ১৪০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এর পাতা যৌগিক, প্রতিটি পত্রফলে ২ থকে ৮টি ছোট পাতা থাকে। মে মাসে ফোটে সাদা সরু পাপড়ির ফুল, আর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে পাকে লাউয়ের মতো বৃহৎ সবুজ ফল, যার প্রতিটি ফলেই ১০ থেকে ১৫টি লালচে শক্ত বীজ থাকে। লতার কাণ্ড, পাতা, ছাল ও বীজে রয়েছে নানা ঔষধি গুণ। কিন্তু বাংলাদেশের বনাঞ্চল থেকে এটি বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত।

স্থানীয় বাসিন্দা ও নলকূপ মিস্ত্রি জালাল উদ্দীন বলেন, “আট বছর আগে লালমনিরহাট থেকে বীজ সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকেই গাছের জন্ম। প্রাথমিকভাবে রান্নার জন্য বীজ আনা হলেও, আমার স্ত্রী চারটি বীজ বেছে বাড়ির আঙিনায় রোপণ করেছিলেন। কয়েক বছরের মধ্যে চারা বড় হয়ে গেলে তা শালবনে স্থানান্তর করা হয়।”

গিলালতার সবুজ চাঁদোয়া


তিনি আরো বলেন, “চারটি গাছের মধ্যে একটি স্ত্রী ও তিনটি পুরুষ গাছ। কেবল স্ত্রী গাছে ফল ধরে, যা প্রতিবছর গড়ে ১০০ থেকে ১৫০টি বীজ দেয়। প্রতিদিন এই লতা দেখতে শালবনে ভিড় করছেন নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোররা।”

দর্শনার্থী সোহেলী আক্তার বলেন, “এ ধরনের লতা আগে কখনো দেখিনি। মনে হয় যেন আকাশে ওঠার সবুজ সিঁড়ি। পরিবার নিয়ে এসেছি, দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে।”

দর্শনার্থী আব্দুল আজিজ বলেন, “বেশকিছু দিন থেকে ফেসবুকে এই গিলা লতা দেখছি। তাই আজ দেখতে এলাম। আসলে অদ্ভুত আকারের এই গাছ, দেখে মনে হচ্ছে লতাগুলো আকাশে উঠার সিঁড়ি। আমি মুগ্ধ হয়েছি।”

জোতবানী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সাজেদুর রহমান বলেন, “এই শালবনে যাতায়াত আগে কষ্টকর ছিল। তবে এখন রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের সুবিধা ও গাছ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “শালবনের এই গিলালতা শুধু স্থানীয় পর্যটনের আকর্ষণ নয়। এটি একটা গবেষণার ক্ষেত্রেও হতে পারে এবং গুরুত্বপূর্ণ সম্পদও হবে। প্রকৃতির আঁকা এক হাতের শিল্পকর্মের মতো। চারটি গিলালতা আজ পর্যটক ও গ্রামের মানুষের গর্বের কেন্দ্রবিন্দু।”

ঢাকা/মোসলেম/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়