হাসপাতালের পরিচালকের বিরুদ্ধে নারী কর্মচারীর ধর্ষণ মামলা
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকার
কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছেন ওই হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের এক আউটসোর্সিং কর্মচারী।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম রতন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, গতকাল রবিবার কিশোরগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল–১ আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। ওই আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ নূরুল আমিন বিপ্লব মামলাটি আমলে নিয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, বাদী ও বিবাদী দুজনই বিবাহিত। বাদী চাকরির পাশাপাশি আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। তার র স্বামী লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। বাদীকে বিভিন্ন সময় চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক শারীরিক সম্পর্কের চেষ্টা করেন। তিনি বিবাহিত, পিতার বয়সী এবং অন্য ধর্মের বলেও রেহাই পাননি। প্রয়োজনে ধর্ম ত্যাগ করে হলেও বাদীকে বিয়ে করতে চান বলে আশ্বাস দেন বিবাদী। কারণে-অকারণে বিভিন্ন সময় তাকে কক্ষে ডেকে নিয়ে কুপ্রস্তাব দিতেন। রাজি না হলে চাকুরিচ্যুতি, এমনকি গুলি করে মেরে ফেলারও হুমকি দিতেন। মোবাইল ফোনে কুরুচিপূর্ণ ম্যাসেজও পাঠাতেন বিবাদী। বিষয়টি হেলিশ রঞ্জনের স্ত্রী জানার পর তিনিও বাদীকে শাসিয়েছেন।
গত ২১ আগস্ট স্ত্রীর সামনে বিষয়টি মীমাংসা করার কথা বলে বাদীকে হাসপাতালের কোয়ার্টারে ডেকে নেন ডা. হেলিশ রঞ্জন। কিন্তু, কোয়ার্টারে গিয়ে তার স্ত্রীকে দেখতে পাননি। এ অবস্থায় কোয়ার্টারে ধর্ষণ করা হয় বাদীকে। চাকরিচ্যুতির ভয় এবং স্বামীর লিভার সিরোসিসের কথা চিন্তা করে মুখ খোলেননি তিনি। পরে ২৬ আগস্ট বিকেলে বাদীকে অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে আবারো ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বাদী চিৎকার শুরু করলে হাসপাতালের স্টাফ ও দর্শনার্থীরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। এ সময় ডা. হেলিশ রঞ্জন তাকে বিবাহিত স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়ে রক্ষা পান। বিষয়টি তিন দিনের মধ্যে সমাধান করার কথা বলে বাদীকে বিদায় করেন। কিন্তু, পরে মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বাদী।
থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মামলা নেননি, অভিযোগ করে বাদী বলেছেন, বাধ্য হয়ে আদালতে মামলাটি দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকারকে একাধিকবার ফোন কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া মিলেনি।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, মামলার বিষয়টি জেনেছি। তবে, কোর্টের আদেশের কপি এখনো হাতে পাইনি। পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/রুমন/রফিক