প্রবাসীর নির্মাণাধীন বাড়িতে গিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মধ্য জামালপুর গ্রামে এক প্রবাসীর নির্মাণাধীন বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীর কাছে চাঁদা দাবি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাড়ির নির্মাণকাজ বন্ধ করতে গেলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য এবং গ্রাম পুলিশের সঙ্গে প্রবাসীর পরিবারের তর্কাতর্কি, কথিত এক সাংবাদিকের চাঁদা দাবি ও পরে তাকে আটক করা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

প্রবাসীর স্ত্রী হেলেনা আক্তার অভিযোগ করেছেন, বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. খায়রুল আলম, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বজলুর রহমান এবং গ্রাম পুলিশ শহিদুল এসে দাবি করেন যে, সরকারি রাস্তার জায়গায় বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। একপর্যায়ে তারা গালিগালাজ করেন এবং ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি ছাড়া কাজ না করতে বলেন। এমনকি, বাড়ি নির্মাণের জন্য প্রতি স্কয়ার ফিট হিসেবে টাকা দাবি করে চলে যান।

এর কিছুক্ষণ পরই এক কথিত সাংবাদিক ওই বাড়িতে গিয়ে ভিডিও ধারণ করেন এবং ভিডিও প্রচার না করার শর্তে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওই সাংবাদিককে আটক করা হলে তিনি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে ছাড়া পান।

আরো অভিযোগ উঠেছে, ওই সাংবাদিক পরে আন্ডারগ্রাউন্ড কিছু পত্রিকায় স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করেন। এর প্রতিবাদে রোববার (৩১ আগস্ট) বিকেলে জামালপুর বাজারের প্রধান সড়কে মানববন্ধন এবং ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জামালপুর বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই কথিত সাংবাদিকের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। রানা সরকার নামে একজন লিখেছেন, “এ ধরনের নামসর্বস্ব আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার সাংবাদিকদের কারণে প্রকৃত গণমাধ্যমকর্মীরা আজ প্রশ্নবিদ্ধ।” 

গাজীপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজুল হক বলেছেন, প্রবাসীর বাড়িতে গিয়ে আল আমিন নামের এক ব্যক্তি ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। আটক হওয়ার পর তিনি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন। 

জামালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হারুন অর রশিদ দেওয়ান বলেছেন, সাংবাদিক পরিচয়ে এক নারীকে ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করা অত্যন্ত দুঃখজনক। স্থানীয়রা তাকে আটক করার পর তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। 

অভিযুক্ত আল আমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি তথ্য সংগ্রহের জন্য ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়ে জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. খায়রুল আলম বলেছেন, আমার কাছে অভিযোগ ছিল, প্রবাসী রাস্তার জায়গায় বাড়ি নির্মাণ করছেন। আমি মেম্বারসহ সেখানে গিয়ে বিষয়টি জানতে চাই। বাড়ির ট্যাক্স দিয়েছে কি না, জানতে চাই। ট্যাক্স পরিশোধের প্রমাণপত্র দেখাতে না পারায় প্রতি স্কয়ার ফিটে ১ টাকা করে দিতে বলি। তবে, আমি কোনো গালাগাল করিনি। চাইলে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে পারেন। আর সাংবাদিক পাঠিয়েছি বলে যে অভিযোগ উঠেছে, আমি ওই সাংবাদিকে চিনি না। তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। 

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন জানিয়েছেন, এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ না করায় কোনো মামলা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।