ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

আধা অকেজো শরীর নিয়েও থামেননি আক্কাস, দরকার একটি হুইল চেয়ার

মো. ইমরান, পটুয়াখালী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৩, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫  
আধা অকেজো শরীর নিয়েও থামেননি আক্কাস, দরকার একটি হুইল চেয়ার

দীর্ঘদিন ধরে অচল কোমরের নিচসহ দুই পা। চলাফেরা করতে হয় হুইল চেয়ারে। তবুও জীবন যুদ্ধে হার মানেননি আক্কাস খন্দকার (২৭)। বেছে নিয়েছেন মোবাইল মেরামতের কাজ। এই কাজে যা আয় হয়, তা দিয়ে বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে চলছেন।

আক্কাসের আরেকটু স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরায় একটি ইলেকট্রিক হুইল চেয়ারের জন্য সরকার অথবা সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন স্থানীয়রা। আক্কাস পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের ছোট বালিয়াতলী গ্রামের বাসিন্দা।

জানা যায়, প্রায় ১২ বছর আগে আক্কাসের বাবা রাজ্জাক খন্দকার বিদ্যুতের শর্টসার্কিটে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ডান হাত হারান। এরপর মাত্র ১৮ বছর বয়সে পরিবারের দায়িত্ব চলে আসে আক্কাসের কাঁধে। বালুর ড্রেজারে শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেখানে সবকিছু স্বাভাবিক চলছিল। কিন্তু, কিছুদিন পরেই ড্রেজার থেকে পরে মেরুদণ্ডে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এতে অচল হয়ে যায় তার কোমরের নিচের অংশ।

আক্কাসের চিকিৎসার ব্যয়ভার চালাতে গিয়ে অসহায় হয়ে পরে পরিবার। জীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় পরে যানে আক্কাস। পরে এক বন্ধুর পরামর্শে ঢাকায় গিয়ে মোবাইল মেরামতের প্রশিক্ষণ নেন। ফিরে এসে পার্শ্ববর্তী লালুয়া ইউনিয়নের শনিবাড়িয়া বাজারে একটি মোবাইল মেরামতের দোকান দেন। বর্তমানে সেই দোকানের আয়ে চলছে তিন জনের পরিবার।

স্থানীয়রা জানান, দেশের বেশির ভাগ প্রতিবন্ধী যেখানে ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নেন। সেখানে আক্কাস প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তবে, তার একা চলাফেরার জন্য একটি ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার প্রয়োজন।

শনিবাড়িয়া বাজার এলাকার শাহজালাল বলেন, ‘‘আক্কাস আসলেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ভিক্ষাবৃত্তি বেছে না নিয়ে মোবাইল মেরামতের কাজ করে পরিবার নিয়ে চলছেন। একটি ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার হলে তিনি একা চলাফেরা করতে পারতেন। কিন্তু, এটা তার সামর্থ্যের বাইরে। তাই, সরকার অথবা সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’’

আক্কাস মিয়া বলেন, ‘‘আমি আহত হওয়ার পরে জীবন নিয়ে অসহায় হয়ে পড়ি। পরে এক বন্ধুর পরামর্শে প্রশিক্ষণ নিয়ে মোবাইল মেরামতের কাজ শুরু করি। এখন আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভালো চলছে। তবে, বাড়ি থেকে দোকানে যাওয়া-আসার জন্য একটি ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার প্রয়োজন।’’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আক্কাসকে একটি ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার প্রদানের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।’’

ঢাকা/রাজীব

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়