শিল্পী মানবেন্দ্র ৬ মাসেও পাননি ‘আশ্বাসের ঘর’
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরের সামনে মানবেন্দ্র ঘোষ
বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় মোটিফ বানানো শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন লাগার পর ছয় মাসের বেশি অতিবাহিত হয়েছে। এখনো ধ্বংসস্তূপেই পড়ে আছে তার স্বপ্নের স্টুডিও। এ ঘটনার পর সরকারি পর্যায় থেকে ঘরের আশ্বাস পেয়েছিলেন তিনি। সেই ‘আশ্বাসের ঘর’ এখনো ফাইলেই বন্দি আছে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত আড়াইটার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ঘোষের বাজার এলাকায় অবস্থিত মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়ি ও স্টুডিওতে আগুন দেয় সন্ত্রাসীরা বলে অভিযোগ ওঠে। আগুনে পুড়ে যায় বাড়িটির টিনশেড ঘরে রাখা মানবেন্দ্র ঘোষের প্রিয় ত্রিশটি চিত্রকর্ম, একটি মোটরসাইকেল ও আসবাবপত্র।
আরো পড়ুন: চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি
এবার ঢাকায় বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখের আদলে ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার মোটিফ’ বানানো হয়। এলাকাবাসীর ধারণা, মোটিফ তৈরির কাজে যুক্ত থাকার কারণে মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন দেওয়া হতে পারে।
মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, “আমি বাঘের মোটিফ তৈরি করেছিলাম, শেখ হাসিনার মুখ নয়। ফেসবুকে অপপ্রচার শুরু হয়। নানা হুমকি পেতে থাকি। ১৫ এপ্রিল রাতে থানায় জিডি করি। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই আগুন। শুধু আমার শিল্প নয়, আগুনে পুড়ে গেছে জীবনের ভালোবাসাটাও।”
আরো পড়ুন: আওয়ামী লীগ মানবেন্দ্র ঘোষকে আক্রমণের উস্কানি দিচ্ছিল: ফারুকী
তিনি বলেন, “সরকার তিন মাস আগে ঘর পুনর্নির্মাণের জন্য ডিজাইন নিয়েছিল। তারপর থেকে কেউ আসেননি। ফারুকী ভাই নিয়মিত খোঁজ নেন, তবু কোনো কাজের অগ্রগতি দেখি না। ঘটনার পর জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় নেতারা বাড়ি পরিদর্শন করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খানম রিতা আর্থিক সহযোগিতা করেন।”
আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘর
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “শিল্পীর পুড়ে যাওয়া ঘরটি তার ডিজাইন অনুযায়ী পুনর্নির্মাণ করা হবে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে। আগুনের পর সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছিল।”
আরো পড়ুন: মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুনদাতাদের গ্রেপ্তার দাবি
মানিকগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম আমানউল্লাহ জানান, ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজন কারাগারে মারা গেছেন, বাকিরা জামিনে। তদন্ত এখনো চলমান, অভিযোগপত্র আদালতে দেওয়া হয়নি।
ঢাকা/চন্দন/মাসুদ