ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

একীভূত হওয়া ব্যাংকগুলোর আমানত নিরাপদ থাকবে: গভর্নর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪৯, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫  
একীভূত হওয়া ব্যাংকগুলোর আমানত নিরাপদ থাকবে: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর

দেশের পাঁচ ব্যাংক একীভূত করে করা হয়েছে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক। এসব ব্যাংকের আমানতকারীদের আশ্বস্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “একীভূত ব্যাংকগুলোর আমানত নিরাপদ থাকবে। আমানত বিমার আওতায় দুই লাখ টাকা পর্যন্ত সুরক্ষা দেওয়া হবে। নতুন ব্যাংকে ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হলে সেখানে লোকসানের কোনো সম্ভাবনা নেই।”

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘ব্যাংকিং সেক্টর রিফর্ম: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

গভর্নর বলেন, “আমরা একটি খারাপ অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে উন্নতির পথে যাচ্ছি। ব্যাংকিং খাতে আস্থা ফেরানো হয়েছে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরানোর ক্ষেত্রে আমরা বহুলাংশে সফল হয়েছি।”

তিনি বলেন, “আমাদের রিজার্ভ গত বছর আট বিলিয়নের ওপর বেড়েছে। এ বছর অলরেডি দেড়-দুই বিলিয়নের মতো বেড়ে গেছে। আমাদের ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট নিয়ে কোনো শঙ্কার কারণ নেই। আমরা যেটা ভেবেছিলাম, হয়তো দু-তিন বছর লাগবে, কিন্তু সেটা প্রথম বছরেই অর্জন করে ফেলেছি। আমরা প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলারের বেশি বাজার থেকে কিনেছি, যখনই দরকার হবে আরো কিনব।”

গভর্নর বলেন, “আমাদের পলিসি হচ্ছে, আমাদের রিজার্ভ আমাদেরই বাড়াতে হবে। ধার করে আইএমএফ থেকে অর্থ নিয়ে বা বিশ্বব্যাংকের অর্থ নিয়ে রিজার্ভ বাড়ানো সম্ভব নয়। এটি উচিতও নয়। এ বছরের শেষ নাগাদ রিজার্ভ ৩৪ থেকে ৩৫ বিলিয়ন ডলারে নেওয়া আমাদের লক্ষ্য। আইএমএফ টাকা দিক বা না দিক, আমরা এ লক্ষ্য পূরণে চেষ্টা করব।”

তিনি বলেন, “অনেক ব্যাংকে মূলধন ঘাটতি রয়েছে এবং খেলাপি ঋণের হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। আমার ধারণা ছিল খেলাপি ঋণ ২৫ থেকে ২৭ শতাংশ হবে, কিন্তু বাস্তবে তা প্রায় ৩৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আমরা কোনো তথ্য লুকাব না। যা সত্য, সেটাই প্রকাশ করা হবে।”

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, “অর্থনীতির সব সূচকই দুর্বল অবস্থায় ছিল। অনেকগুলো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে সংস্কারগুলো দৃশ্যমান হয়েছে আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতে। একইসঙ্গে সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।” 

তিনি বলেন, “ব্যাংকিং খাত ঘুরে দাঁড়াতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে হবে।”

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, “রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যাংকিং খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। রিজার্ভ বাড়ছে, ডলার বাজারে অস্থিরতা কমেছে। তবে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নানা সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া শুধু ব্যাংকিং ব্যবস্থা সংস্কার করলে সব সমস্যার সমাধান হবে না।”

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়