জামালপুর কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ
জামালপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
জামারপুর কারাগারের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।
জামালপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় জেলা প্রশাসকসহ বেশ কয়েকটি কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি জেলার। মোবাইল ফোন রিসিভ করেনি জেল সুপারও। তবে সুযোগ থাকলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ভুক্তভোগী নারীর নাম মোছা. রাবিয়া (নার্গিস)। তিনি শহরের পাথালিয়া গ্রামের মরহুম মুক্তিযোদ্ধা আঃ বাতেনের সন্তান।
মোছা. রাবিয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন- জামালপুর শহরের দেওয়ানপাড়া এলাকায় পৈত্রিক সূত্রে ২৫ শতাংশ জমি পান তিনি ও তার বোন। সেই জমিতে বাড়ি নির্মাণ করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছিলেন রাবিয়া ও তার পরিবার। কিন্তু জামালপুর জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করার চেষ্টা করলে তিনি ও তার পিতা আঃ বাতেন বাদী হয়ে ২০০৭ সালে জামালপুরের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
২০১০ সালের ২৭ জুলাই সেই মামলার রায় পান তারা এবং ৩ আগস্ট ডিক্রী স্বাক্ষরিত হয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে কারা কর্তৃপক্ষ আপিল করলে আদালত সেই সময়ও ডিক্রী বহাল রাখার নির্দেশ দেন। তবুও চলতি বছরের ৫ নভেম্বর (বুধবার) কারা কর্তৃপক্ষ জোর করে সেই জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করার চেষ্টা করে। সেই দিন বিকেল ৩টায় সেখানে কাজ করতে নিষেধ করলেও নির্মান কাজ চলমান রাখে কারা কর্তৃপক্ষ।
ভুক্তভোগী রাবিয়া বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও কারা কর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশ অমান্য করে অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে আমার জমি দখল করে নিচ্ছে। আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছেন। এখন আমাদের জমিই দখল হয়ে যাচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “এর আগেও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময়ে আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করে কারা কর্তৃপক্ষ। পরে আদালতের কাগজপত্র দেখালে তারা আর সেই জমি দখল করতে পারেনি। এখন এই জমি দখল হলে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। আমরা চাই এই জমি ফেরত পেতে প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করুক।”
এসব বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার দুপুরে জামালপুর জেলা কারাগারে গেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি জেলার লিপি রানী সাহা।
জামালপুর কারাগারের জেল সুপার মো. গোলাম দস্তগীরের মোবাইল ফোনে বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা ১১ থেকে ৩টা ১৪ পর্যন্ত একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। এরপর শুক্রবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটের পর থেকে ১২টা ৪৯ পর্যন্ত ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং বেলা ৩টা ১৩ মিনিটে ফোন দিলে তিনি কলটি কেটে দেন।
তবে জামালপুরের জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি দেখব এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকলে, তা গ্রহণ করা হবে।’’
ঢাকা/শোভন/এস