ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

অস্ত্র নিয়ে শিক্ষকদের প্রাণনাশের হুমকি যুবকের

ফরিদপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৪, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫  
অস্ত্র নিয়ে শিক্ষকদের প্রাণনাশের হুমকি যুবকের

দেশীয় অস্ত্র হাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের ভীতি দেখান আল সাদ নামে এক যুবক।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিয়ে অধ্যক্ষসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আল সাদ নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। 

কলেজটিতে ডিগ্রি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলাকালীন জোরপূর্বক কেন্দ্রে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন তিনি। তাতে বাঁধা দেওয়ায় ওই যুবক এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে। কলেজের সিসি ক্যামেরায় দৃশ্যটি ধরা পড়ে। 

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) উপজেলার কামারগ্রামে অবস্থিত আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজে এই ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ কলেজে এসে অধ্যক্ষের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। 

ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মোটরসাইকেলে দুই যুবক প্রবেশ করেন। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা যুবক আল সাদ হাতে করে বড় একটি দেশীয় অস্ত্র রামদা উঁচিয়ে নিয়ে আসেন। এসময় অনেকে দৌড়ে সরে যায়। এরপর কলেজের মূল ভবনে প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণ পর নেমে বেরিয়ে যান।

কলেজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আল সাদ পৌরসভার কুসুমদি গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং পূর্বে ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। বর্তমানে তার মামা মো. আমিরুল ইসলাম পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। তার সাথে থাকা অপর যুবকের নাম সাদি (২৫)। তিনি পৌরসভার শ্রীরামপুর এলাকার গফুর খাঁর ছেলে। 

আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ এম এম মজিবুর রহমান মুজিব জানান, ওই যুবকের স্ত্রী ডিগ্রী প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ওই যুবক পরীক্ষা চলাকালীন গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তখন কলেজের পিওন নাজমুল বাঁধা দেন। তবে বাঁধা না মেনে কেন্দ্রের ভেতরে আসার চেষ্টা করেন তিনি। 

তিনি বলেন, “কেন্দ্রে প্রবেশের সময় আমি তাকে বের হওয়ার অনুরোধ করি। তখন বলে আমার স্ত্রী কোথায় বসেছে দেখব এবং উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। আমাকে হাত উঁচু করে বলতে থাকে, আমাকে চিনেন? আমি দেখে নেব, থানা পুলিশ দেখতেছি। তখন পরিসংখ্যানের শিক্ষক সমীর কুমার বিশ্বাস তার হাত ধরে বাঁধা দিলে তিনি আরো উত্তেজিত হয়ে ওঠেন।” 

তিনি বলেন, “এ ঘটনার পর তিনি কলেজ থেকে বের হয়ে যান। এর প্রায় ২০ মিনিট পর একটি মোটরসাইকেলে করে রামদা নিয়ে কলেজের ভেতরে ঢুকে ত্রাস সৃষ্টি করেন। তখন আমিসহ সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। পরে ইউএনও, ওসিকে ফোন করে বিষয়টি জানালে পুলিশ আসে। এর আগেই ওই যুবক চলে যান। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় নেতারা এসে দুঃখ প্রকাশ করে এবং ক্ষমা চেয়েছেন। তাদের মাধ্যমে ওই যুবক মুচলেকা দিয়েছেন।”

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আল সাদ ও সাদি নামের অভিযুক্ত ওই দুই যুবকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নান আব্বাস বলেন, “মৌখিকভাবে বিষয়টি শুনেছি। তবে বিস্তারিত বিষয়টি জানা নেই।”

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসনাত বলেন, “খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কলেজে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে ওই যুবককে পায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/তামিম/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়