প্রশান্তি দিচ্ছে ফাহাদের ফলের জুস
মামুনূর রহমান হৃদয় || রাইজিংবিডি.কম
ক্লাস শেষে গোটা একটি দিন পরে থাকে। শিক্ষার্থীরা কেউ সময় কাটায় আড্ডায়, কেউ পার করে অলসতায়, আবার কেউ চেষ্টা করে ভালো কিছু করার। স্নাতক শেষে অন্যের অধীনে নয় স্বপ্ন দেখেন উদ্যোক্তা হওয়ার। চাকরির বাজারে সবার সুযোগ হবে না ভেবেই অনেকের এই ভিন্ন চিন্তা।
মোহাম্মদ আবরার ফাহাদ । নিজ উদ্যোগে তিতুমীর কলেজের সামনে দিয়েছেন জুসবার। জুসবার থেকে অর্জিত আয় পড়ালেখার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারেও টাক পাঠাচ্ছেন। নানা বিষয় নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মামুনূর রহমান হৃদয়।
প্রশ্ন : জুসবার দেওয়ার ভাবনাটা মাথায় কিভাবে আসলো?
ফাহাদ : পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পড়ালেখার পাশাপাশি রেস্টুরেন্টে চাকরি করতাম। বেশকিছু মাস চাকরি করার পর সিদ্ধান্ত নিলাম অন্যের অধীনে আর চাকরি নয়; এবার নিজে কিছু করার পালা। সেই চিন্তা থেকে নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শাকিল চত্বরে জুসবার দিয়েছি।
প্রশ্ন : শুরুর দিকে পথ চলাটা কেমন ছিল?
ফাহাদ : শুরুর দিকে পথ চলাটা কিছুটা কঠিন ছিল। জুসবার দিতে আমার এক লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। যখন রেস্টুরেন্টে চাকরি করতাম তখন থেকেই টাকা জমানো শুরু করি। জুসবার দেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের জন্য জুসে ছাড়ের ব্যবস্থাও রাখি। ধীরে ধীরে ক্রেতাদের কাছে আমার তৈরি ফলের জুস জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই পথচলাটা কঠিন হলেও পরিবার-পরিজন সবাইকে কাছে পেয়েছি।
প্রশ্ন : জুসবার নিয়ে কেউ বিরূপ মন্তব্য করেছে কি না?
ফাহাদ : আমার জুসবার নিয়ে কেউ বিরূপ মন্তব্য করবে বলে মনে হয় না। কারণ জুসবার থেকে অর্জিত আয় পুরোটাই সৎ পথে করা। আমার কাছে সৎ পথে রোজগার অনেক বড় পাওয়া। এটা ভালো লাগা ও ভালোবাসার জায়গা। এই সৎ কাজকে কেউ হেয়ভাবে দেখবে বলে মনে হয় না।
প্রশ্ন : শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কি বলবেন?
ফাহাদ : বাবা-মায়ের ওপর চাপ না বাড়িয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর উচিত কিছু করা। কেউ যদি ইচ্ছা করে আমি নিজে থেকে কিছু করব, তাহলে অবশ্যই সম্ভব। ‘আমাকে দিয়েও সম্ভব' এমন বিশ্বাস রেখে শিক্ষার্থীদের সামনের পথ চলতে হবে।
প্রশ্ন : ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
ফাহাদ : আমি উওরা , ধানমণ্ডি রেস্টুরেন্টে চাকরি করেছি। সেখানেই জুস বানানো শিখেছি। পাশাপাশি ইউটিউবের সহায়তা নিয়েছি। বর্তমানে জুসবার দিয়ে ভালোই চলছে। পরিকল্পনা মতো সব চললে ভবিষ্যতে নিজের একটি রেস্টুরেন্ট দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে।
/মেহেদী/