ঢাকা     শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৫ ১৪৩১

৮ বছরেও চূড়ান্ত হয়নি কুবি শিক্ষার্থী হত্যা মামলার চার্জশিট

কুবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২১, ১ আগস্ট ২০২৪  
৮ বছরেও চূড়ান্ত হয়নি কুবি শিক্ষার্থী হত্যা মামলার চার্জশিট

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ হত্যার আট বছর পেরিয়ে গেছে। তবে এখনো শেষ হয়নি তদন্ত ও চার্জশিট গঠনের কাজ।

বারবার তদন্ত সংস্থা পরিবর্তন, চার্জশিটে কখনো আসামি বাদ, কখনো নতুন আসামি যুক্ত, আবার কখনো আদালতে নিহতের মায়ের নারাজিতে কেটেছে এ দীর্ঘ সময়। তবে নিহত খালেদ সাইফুল্লাহর মা ফাতেমা আক্তার বিচার পাওয়ার আশা আজও ছাড়েননি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার ও হল দখলকে কেন্দ্র করে গত ২০১৬ সালে আগস্ট মাসের প্রথম প্রহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয় । এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ। তার বাড়ি দাউদকান্দি উপজেলার সদরে।

ঘটনার পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের  নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদার বাদী হয়ে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা পরিচয়ে সদর দক্ষিণ থানায় মামলা করেন। ওই দিনই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সহসভাপতি রুপম চন্দ্র দেবনাথ, যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ, ইংরেজি বিভাগের জাহিদুল আলম, লোকপ্রশাসন বিভাগের আবুবকর ছিদ্দিক, সুদীপ্ত নাথ ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের সজন বরণ বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনদিন পর মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র বিপ্লব চন্দ্র দাসকে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে সবাই জামিনে মুক্ত।

প্রথমে এ মামলার তদন্ত করেন জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি)। সংস্থাটি নয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। তবে চার্জশিটে নারাজি দেন খালেদ সাইফুল্লাহর মা ফাতেমা আক্তার। দ্বিতীয় দফায় তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। আবারও তিনি নারাজি দেন ওই চার্জশিটের। তৃতীয় দফায় মামলাটি পিবিআই থেকে সিআইডিতে যায় এবং সর্বশেষ মামলাটি কুমিল্লা পুলিশ সুপারের কাছে আছে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, খালেদ সাইফুল্লার মায়ের দেওয়া নারাজির কারণে এখনো বিচার কার্য শুরু হচ্ছে না। এখন মামলাটি তদন্তের জন্য সংস্থা পরিবর্তন হয়েছে।

নিহত খালেদ সাইফুল্লাহর মা ফাতেমা আক্তার বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ছেলেকে পাঠাইলাম পড়াশোনার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে ফেরত দিলো লাশ। এ বিচার কে করবে? আমার ছেলে মরার আট বছর হতে যাচ্ছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ছাত্রলীগ কি করলো তার জন্য? সে তো বিরোধী দলে ছিল না। সে তো সরকার দলেরই লোক। কেউ তো কিছু করে নাই আমার ছেলের জন্য। আবরার মারা গেলো, আবু সাঈদ মারা গেলো তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনেক কিছু করছে। গেট বানাইলো হেরার নামে। আমার ছেলের নামে তো কিছু করলো না।

মামলা সম্পর্কে তিনি বলেন, পিবিআই থেকে মামলা বর্তমানে পুলিশ সুপারের কাছে আছে। এছাড়া কোনো আপডেট নেই আমার কাছে। আমি দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় তেমন কোনো আপডেট নিতে পারিনি।

জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম বলেন, আট বছর আগের ঘটনা। মামলাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দিব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন বলেন, বিষয়টা তদন্তাধীন। তাই কোনো মন্তব্য করবো না। আমরাও চাই সুষ্ঠু বিচার হোক।'

/এমদাদুল/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়