ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

৩ শিক্ষার্থীকে ‘গুপ্তহত্যা’র প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪০, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪   আপডেট: ২২:৫৫, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
৩ শিক্ষার্থীকে ‘গুপ্তহত্যা’র প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থীকে ‘গুপ্তহত্যা’র প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় পিলখানা হত্যাকান্ড থেকে শুরু করে বিগত সরকারের আমলের সকল হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করেন তারা।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বটতলা এলাকায় এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

মিছিলে শিক্ষার্থীদের ‘পিলখানা হত্যার বিচার চাই’, ‘সুজন হত্যার বিচার চাই’, ‘বিপ্লবীরা রাস্তায় মরে, সরকার কি করে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন কি করে’, ‘বিচার নিয়ে গড়িমসি, মানি না মানবো না’, ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা, হুশিয়ার সাবধান’, ‘ভারতের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়। 

সমাবেশে আধিপত্যবাদবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক আনজুম শাহরিয়ার বলেন, “পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এ দেশে আধিপত্যবাদ ও ভারতীয় আগ্রাসন শুরু হয়েছিল। বিপ্লব পরবর্তী সরকার এসব বিচার নিশ্চিত করার নামে গড়িমসি করছে ৷ বিপ্লব পরবর্তী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে বিচারের আওতায় এনে তাদের পুনর্বাসন বন্ধ করার কথা ছিল; তাও হয়নি। তারা আজ বিভিন্ন স্থানে আমাদের বিপ্লবীদের উপর চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে। অফিসিয়াল বিবৃতি দিয়েও হামলা চালানোর ঘোষণা দিচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসান বলেন, “অত্যন্ত লজ্জার ও গ্লানির যে, প্রায় ২ হাজার মানুষের আত্মত্যাগের পর আজ এ জায়গায় দাঁড়িয়ে সেই পলাতক পতিত ফ্যাসিস্টদের কাছ থেকে নিরাপত্তার জন্য সরকারের কাছে আমাদের দাবি জানাতে হয়। এটা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি নিরাপত্তা সংস্থার ব্যর্থতা বলে আমরা মনে করি। আমরা চাই, আমাদের দেশপ্রেমিক যেসব সেনা অফিসারদের নির্মমভাবে খুন করা হয়েছিল, তার যেন অতিদ্রুত সুষ্ঠু বিচার করা হয়। এছাড়া সারাদেশে আন্দোলনকারীদের উপর যে চোরাগোপ্তা হামলা চলছে, তা বন্ধ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন সর্বোচ্চ দৃঢ় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।”

জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক ইয়াহিয়া জিসান বলেন, “বিপ্লবের সাড়ে চার মাস পেরিয়ে গেলেও জুলাই বিপ্লবে আন্দোলনকারীদের খুনিদের বিচারের দাবিতে রাজপথে নামতে হচ্ছে, এটা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য লজ্জাজনক৷ বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। বাতিলকৃত সেই কমিশন পুনরায় গঠন করতে হবে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের অতিসত্ত্বর বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে৷ উপদেষ্টারা জুলাই বিপ্লবে হত্যাকারীদের বিচারে কাজ করতে না পারলে তাদের সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরে আসা উচিত।” 

গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “আমরা জুলাই আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে এ সরকারকে পরিষ্কার ভাষায় বলে দিতে চাই, ২০০৯ সালে পিলখানায় দেশপ্রেমিক সেনা সদস্যদের হত্যা করা হয়েছিল। অতিসত্বর একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অন্যত্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যার্থতা হিসেবে গণ্য হবে এটি। আগামীতে গণতান্ত্রিক একটি নির্বাচন দেওয়ার আগেই সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে, অতিসত্বর পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হোক।”

তিনি বলেন, “দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের হত্যা করা হচ্ছে, হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। জুলাই আন্দোলনে হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পরবর্তীতে যদি আবারো একই দাবিতে আমাদের এখানে এসে দাঁড়াতে হয়, তাহলে তখন আমরা আর এখানে নয়, সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করতে বাধ্য হব।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়