‘ব্রিটিশ-আমেরিকার অধিকাংশ জাদুঘরের সম্পত্তি ভারত থেকে চুরি করা’
চবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

বক্তব্য প্রদান করছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান
ব্রিটিশ-আমেরিকার অধিকাংশ জাদুঘরের সম্পত্তি ভারত থেকে চুরি-ডাকাতি করে নেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান।
তিনি বলেন, “পৃথিবীর অধিকাংশ জাদুঘর বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকার বেশিরভাগ জাদুঘরের সম্পত্তি ভারত থেকে চুরি-ডাকাতি করে নেওয়া হয়েছে। যেমন- বিখ্যাত ‘ময়ুর সিংহাসন’ ভারত থেকে ইরানে নিয়েছিলেন নাদির শাহ। সেটি পরে সেখান থেকে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে স্থান পেয়েছে।”
রবিবার (১৮ মে) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ব্যবসায় প্রশাসন মিলনায়তনে ‘গ্রন্থাগার, জাদুঘর, মহাফেজখানা: সত্যের সাধনা না রাষ্ট্রের পাহারা?’ শীর্ষক বক্তৃতায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, “জাদুঘরে কোনো জিনিস সংরক্ষণ করবেন কোনটি করবেন না, তা প্রথমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ২০০৩ সালে ইরাকে যুদ্ধের পর দেখা গেল, ইরাকের প্রাচীন মেসোপোটেমিয়া সভ্যতার সমৃদ্ধ বহু শিল্পদ্রব্য চুরি-ডাকাতি হয়ে ইউরোপ-আমেরিকার নানা জাদুঘরে স্থান পেল। আপনি জানেন, এটি চুরি করা। যে চুরি করছে, সে আরেকজনের কাছে বিক্রি করেছে। ভদ্রলোক সে সম্পত্তির মালিক হয়ে আপনার জাদুঘরে বিক্রি করতে এসেছে। এখন আপনি রাখবেন কী রাখবেন না, সে নৈতিক প্রশ্নটা দেখা গিয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ৪৭ সালে যে স্বাধীন হয়েছিল, সেটাকে আমরা বেমালন ভুলে গেছি এবং ভুলতে সহায়তা করেছি। ইংরেজদের মতো পাকিস্তানেও একই কাহিনী হওয়ায় আমরা ৭১ এ লড়াই করেছি। কারো কারো ধারণা, ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের ঘটনা এত বড় যে ৭১ এর ঘটনা বলার দরকার নাই। এটি একই মাত্রার ভুল, যা পাকিস্তানিরা করেছে।”
অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ বলেন, “একাত্তর আসার পর ৪৭ কে ভোলা হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার প্রথম ভিত্তি ৪৭, এরপর ৭১, ২৪ সবগুলোকেই আমাদের মনে রাখতে হবে। ইতিহাসে এ রকম ধারা আরো আসতে পারে। কোনোটাকেই ভোলা যাবে না।”
১৮ মে আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উপলক্ষে এ বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর’ কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী