ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

চাকসু নির্বাচনের তারিখ পেছানো নিয়ে যা জানা গেল

চবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৫৮, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫  
চাকসু নির্বাচনের তারিখ পেছানো নিয়ে যা জানা গেল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের সময় পেছানো হয়েছে। পরিবর্তিত তারিখ অনুযায়ী, আগামী ১৫ অক্টোবর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তবে হঠাৎ নির্বাচনের তারিখ পেছোনোর নেপথ্যে ভিন্ন কারণ আছে কি-না সে প্রশ্নও রাখছেন কেউ কেউ। আবার বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে দেখছেন অনেকে।

আরো পড়ুন:

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আরবি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী নোমান ইবনে মোসলেহ উদ্দিন ফেসবুকে লেখেন, “যেই যুক্তিতে ১২ তারিখের চাকসু নির্বাচন ১৫ তারিখ হলো, সেই যুক্তি তো নির্বাচন কমিশনসহ প্রার্থীরা আগেই জানতেন। তাহলে কেনো এটা একেবারে তফসিলের আগে অথবা পাশ হওয়ার পরপর পেছানো হলো না?”

শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহীম এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “চাকসু নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে।” ঐ পোস্টের কমেন্টে তিনি যুক্ত করে লেখেন “১৫ তারিখ চাকসু এবং ১৬ তারিখ রাকসু।”

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, “প্রথমত, পূজার বন্ধ এবং বিসিএস পরীক্ষার শিডিউল আগে থেকেই ছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কেন আগেই ১৫ তারিখ না দিয়ে ১২ তারিখ দিয়েছে?”

তিনি বলেন, “পাশাপাশি রাকসু পেছানোর পরপরই চাকসু পেছানো কি একই সূত্রে গাঁথা কিনা? সেই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এছাড়াও অনেকগুলো বিভাগ ইতোমধ্যেই পরীক্ষার পুনঃনির্ধারণ করেছে, সেগুলো আবার পেছাতে হবে।”

শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন বলেন, “তিনদিন নির্বাচন পেছানোর বিষয়টিকে আমরা স্বাভাবিকভাবেই দেখছি এবং এটি শিক্ষার্থীবান্ধব মনে করছি। পূজোর বন্ধ থাকায় অনেকে বাড়িতে চলে যাবেন। আবার হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রার্থীরা এ সময়টাতে পূজোতে থাকবেন। সার্বিক বিবেচনায় এটি যথার্থ সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

তবে পূজোর বন্ধের বিষয়টি পূর্বে অবগত থাকার পরও কেন তখন নির্বাচন পেছানোর দাবি তুলেননি- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা তফসিল ঘোষণার সময় বা পরে নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে কিছু জানাইনি। তবে এখন নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই।”

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহ্বায়ক ও চাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, “আমরা বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছি। তবে এজন্য এক সপ্তাহ পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তকে আমরা মেনে নিচ্ছি না। এতে অনেকগুলো বিভাগ সেজনজটে পড়তে পারে।”

শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ও চাকসুর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী জশদ জাকির বলেন, “বিষয়টিকে আমরা খুব ইতিবাচকভাবেই দেখেছি। এ ক্যাম্পাসে প্রায় ২ হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী আছেন। এখন তিনদিন পেছানোয় তারা স্বাচ্ছন্দে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।”

তিনি আরো বলেন, “তফসিল ঘোষণার সময় নির্বাচন পেছানোর কথা মৌখিকভাবে বললেও আমাদের সেভাবে বলা হয়নি। কারণ, অনেকে ব্যাশিং করে বলতে পারে যে আমরা চাকসু বানচালের ষড়যন্ত্র করছি। তবে এ সময়ে এসে নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্তকে আমরা খুব ভালোভাবে নিচ্ছি।”

এ বিষয়ে চাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, “বন্ধের বিষয়টি নিয়ে আমরা পূর্বে অবগত ছিলাম। সবকিছু বিবেচনা করেই ১২ অক্টোবর নির্বাচনের তারিখ দেওয়া হয়েছিল এবং আমরা এ সময়েই নির্বাচন করতে করতে পারতাম। আমাদের কোনোকিছুই গ্যাপ নেই, সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া আছে।”

তিনি বলেন, “তবে গতকাল (সোমবার) মতবিনিময় সভায় অধিকাংশ প্রার্থী ও শিক্ষার্থীর দাবি ছিল নির্বাচন কয়েকদিন পেছানোর। শুধু এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচন তিনদিন পেছানো হয়েছে। এছাড়া অন্য কোনো কারণ নেই।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়