ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ক্ষতিগ্রস্ত বেসরকারি খাততে সহায়তা দিন, আইএফসিকে অর্থমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২২, ৩১ অক্টোবর ২০২০  
ক্ষতিগ্রস্ত বেসরকারি খাততে সহায়তা দিন, আইএফসিকে অর্থমন্ত্রী

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বেসরকারি খাতকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে বিশ্বব্যাংকের সহাযোগী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পাশাপাশি বাংলাদেশের বন্ড ও অন্যান্য ঋণ মার্কেট বিকাশেও সহযোগিতা চেয়েছেন।

বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সভা-২০২০ এর অংশ হিসেবে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল ও আইএফসি’র চিফ অপারেটিং অফিসার স্টিফানি ফন ফ্রিডবার্গের নেতৃত্বে আইএফসি প্রতিনিধি দলের মধ্যে ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বিশ্ব ব্যাংকে বাংলাদেশের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শফিউল আলম, অর্থবিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন আলোচনায় অংশ নেন।

অন্যদিকে, আইএফসি’র এশিয়া প্যাসিফিকের ভাইস প্রেসিডেন্ট আলফোনসো গার্সিয়া মোরা এবং বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের কান্ট্রি ডিসেক্টর ওয়েন্ডি ওয়ার্নার আলোচনায় অংশ নেন।

সভার শুরুতে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে অব্যাহত সহযোগিতার মাধ্যমে সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আইএফসির অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া কোভিড -১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদস্য দেশগুলোকে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার সাম্প্রতিক উদ্যোগের জন্যও ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায় অনুযায়ী কোভিড-১৯ এর টিকা আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে অত্যন্ত আগ্রহী এবং বদ্ধপরিকর। তাই এ বিষয়েও আইএফির করণীয় নিশ্চিতে আহ্বান জানান তিনি।

সভায় অর্থমন্ত্রী বলেন, কোভিড -১৯ নির্বিচারে বিশ্ব অর্থনীতি ও মানবজীবন হুমকীর সম্মুখীন করেছে, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ আয়ের দেশের সুনাম অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বাস্তসম্মত ও সময়োপযোগী উদ্যোগ নেওয়ার মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি। উদ্যোগগুলির মধ্যে জিডিপির ৪.৩ শতাংশ সমতুল্যের ১৪.১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ অন্যতম।

তিনি বলেন, গত বছর লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে বিশ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের বন্ড জারি করতে আইএফসির সহায়তা এবং সহযোগিতায় বিশ্বে প্রথমবারের মত প্রাথমিক ভিত্তিতে ৮০৭ মিলিয়ন টাকা (৯.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) সমপরিমাণ বাংলাদেশি ‘টাকা বন্ড’ চালু করা হয়েছিল, যা আগামী এক বছরে প্রায় ৮৫ বিলিয়ন টাকা (১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) মূল্যমানের বন্ডে উন্নীত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিল আইএফসি। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত ছিল কারণ এটি আন্তর্জাতিক বাজারে জারি করা প্রথম বাংলাদেশি টাকা বন্ড। পরবর্তীতে করোনার কারণে এটি কিছুটা স্তিমিত হয়ে গেলেও আশা করা যায় এখন আবার আইএফসি এ খাতটি সমৃদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

আইএফসি-কে বাংলাদেশকে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য বিশেষত মহামারি দ্বারা আক্রান্ত হওয়া বেসরকারি খাতকে প্রণোদিত করার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি আইএফসিকে সুদের হার কমানোর অনুরোধ করছি যাতে বেসরকারি খাত স্বল্প সময়ের মধ্যেই উজ্জীবিত হতে পারে।

অর্থমন্ত্রী সভায় বাংলাদেশের ফিক্সড ইনকাম সিকিউরিটিজ বিশেষ করে বন্ড মার্কেট উন্নয়নের জন্য তিনি আইএফসির সহযোগিতা আশা করেন। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনও আশ্বস্ত করে যে তারা বাংলাদেশের বিষয়গুলো ইতিবাচকভাবে দেখবে।

২০২৪ সালে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উন্নীত হবে, এসডিজির সাফল্যসহ উন্নয়নের পরবর্তী পর্যায়ের জন্য বেসরকারি মূলধনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) আইএফসি’র উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০১৭-২১ অর্থবছরের মধ্যে বাংলাদেশে আইএফসির ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের (এলটিএফ) দেওয়া প্রতিশ্রুত এবং ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত তার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের আলোচনায় এ বিষয়গুলোও আলোচনায় প্রাধান্য পায়।

হাসনাত/এসএম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়