ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বাজেটে দেশীয় শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে: অর্থমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৪, ৮ এপ্রিল ২০২১  
বাজেটে দেশীয় শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (ফাইল ফটো)

আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে দেশীয় শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি আরও জানান, করোনাভাইরাসের কারণে দেশীয় শিল্প খাতের জন‌্য যেসব প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলোর মেয়াদসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা।

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল প্রাক-বাজেট আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ‌্য জানান।

সভায় অংশ নেন এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম, বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক, বিকেএমইএ প্রেসিডেন্ট একেএম সেলিম ওসমান, বিটিএমইএ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী খোকন, বাংলাদেশ লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসেসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুল ইসলাম, এমসিসিআই প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর, ডিসিসিআই প্রেসিডেন্ট রিজওয়ান রহমান, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মাহবাবুল আলম, বাংলাদেশ ওমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট সেলিমা আহমেদ, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট রূপালী হক চৌধুরী, ওমেন এন্টারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট শাহরুক রহমান এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রাক-বাজেট আলোচনায় দেশের প্রায সব চেম্বারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। সভায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্যবসায়ী নেতারা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তাদের বিভিন্ন দাবির মধ্যে বেশিরভাগই ট্যাক্স সংক্রান্ত। সভায় তাদের উপস্থাপিত দাবিগুলো রেকর্ড করা হয়েছে। যারা বাজেট প্রণয়নে জড়িত, এসব দাবি নিয়ে তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হবে। সেখানে যেসব দাবি যৌক্তিক এবং দেশের জন্য মঙ্গলকর মনে হবে সেগুলো অবশ্যই বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’ 

প্রাক-বাজেট আলোচনায় শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে নতুন কী দাবি করা হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘দাবি তো সব সময় বেশি করা হয়। তারা যেসব দাবি করেছেন, তা অযৌক্তিক বলব না। তবে সরকারের পক্ষে কতটা নেওয়া সম্ভব, সে বিষয়ে এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। অর্থ সচিবের নেতৃত্বে বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে। আমরা দেখব, তাদের দাবি কতটা গ্রহণ করা যায়।’

তিনি বলেন, ‘গত বছর কোভিড-১৯ এর কারণে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২৩ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। এতে তাদের উপকার হয়েছে বলে তারা স্বীকার করেছেন। তবে যেহেতু কোভিড-১৯ এখনও দেশে রয়ে গেছে, তাই প্রণোদনা প্যাকেজের মেয়াদ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে এ মুহূর্তে কিছু বলা সম্ভব নয়। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নিজে ব্যবসায়ীদের জন‌্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। আমরা শুধু সে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেছি। প্রণোদনা প্যাকেজের সুযোগ-সুবিধা  বাড়ানোর বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করে।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রণোদনা প্যাকেজ দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। তবে এখনও এমন অনেক খাত আছে, যেসব খাতে নানা সমস্যা আছে। তারা প্রণোদনা প্যাকেজের কোনো সুবিধা পায়নি। ব্যবসায়ী নেতারা নতুন খাতগুলোর জন্যও প্রণোদনা প্যাকেজের সুযোগ দাবি করেছেন।’

আসন্ন বাজেটে কালো টাকা সাদা করার কোনো দাবি ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে করা হয়েছে কি না? এ প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের সভায় কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। তারা আগেই তাদের বিভিন্ন দাবির ডিটেইল জানিয়েছেন। তবে তারা কালো টাকা সাদা করার মেয়াদ না বাড়িয়ে কীভাবে সরকারের কাজগুলো করা যায়, সে বিষয়ে কথা বলেছেন।’

গত বছর লকডাউনের সময় প্রণোদনা প্যাকেজসহ সাধারণ মানুষের কাছে ক্যাশ ট্রান্সফারের মতো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল। এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়েছিল। এবারও সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশার বাণী আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সব মানুষ আমাদের কাছে মূল্যবান। তাদের জীবন-জীবিকা যাতে ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে  প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সচেতন। আশা করছি, তিনি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেবেন।’

আগামী বাজেটে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে? এ প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেশীয় অর্থনীতি আরও সম্প্রসারণ করতে হবে। তাহলেই মানুষের কাছে অর্থ যাবে। এজন্য আমাদের রাজস্ব আদায়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। অন্যদিকে, রাজস্ব আদায় করতে গিয়ে যাতে মানুষের ভোগান্তি না বাড়ে সেদিকেও নজর দিতে হবে। এছাড়া, কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি দেশীয় অর্থনীতিকে সুসংহত করার ওপর জোর দেওয়া হবে। এজন্য বাজেটে দেশীয় শিল্পকে চাঙ্গা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়