প্রাক-অর্থায়ন তহবিল রপ্তানি খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে: গভর্নর

দেশের রপ্তানিমুখী শিল্পের বিকাশ ও প্রসারের চলমান ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ১০ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি সহায়ক প্রাক-অর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তহবিল রপ্তানি খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ৪৯টি তফসিলি ব্যাংকের চুক্তি সম্পাদন অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এসব কথা বলেন।

অংশগ্রহণ চুক্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালক মাকসুদা বেগম এবং তফসিলি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা স্বাক্ষর করেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক নূরুন নাহারের সভাপতিত্বে ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং নতুন এই তহবিলের বৈশিষ্ট্য ও সুবিধাগুলো বিস্তারিত তুলে ধরেন।

গভর্নর বলেন, করোনা মহামারির পরবর্তী অর্থনৈতিক অভিঘাত ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরূপ অবস্থা বিরাজ করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে অধিকতর অভিঘাত সহনশীল করার পাশাপাশি এ খাতের বিকাশ ও প্রসারের চলমান ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্পূর্ণ অর্থায়নে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি রপ্তানি সহায়ক প্রাক-অর্থায়ন তহবিল গঠন করা হয়। এছাড়া, সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কৌশলের সাথে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয় ষান্মাসিকের বিচক্ষণ মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি কৃষক, নারী উদ্যোক্তা, কুটির শিল্পসহ ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ উদ্যোক্তা এবং রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ীদের জন্য বেশ কয়েকটি প্রণোদনা ঋণ প্যাকেজ বাস্তবায়ন, ব্যাংকগুলোকে নীতি সহায়তা প্রদান, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় অধিকতর মানুষকে জাতীয় উৎপাদনের সঙ্গে সম্পৃক্তকরণ এবং সমাজের দরিদ্র ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর আর্থিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক নিরস্তর কাজ করে চলেছে।

তিনি বলেন, নতুনভাবে গঠিত ১০ হাজার কোটি টাকার প্রাক-অর্থায়ন তহবিলটিও দেশের রপ্তানি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। ইএফপিএফের অর্থায়ন কার্যক্রম শিগগির শুরু হবে। মাত্র ৪ শতাংশ সুদে এ তহবিল থেকে কাঁচামাল ক্রয় বা আমদানির বিপরীতে প্রত্যক্ষ ও প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকদের দেশি মুদ্রায় ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকবে, যার মেয়াদ হবে ১৮০ দিন। ব্যাংক পর্যায়ে সুদহার হবে ১.৫ শতাংশ।

গভর্নর জানান, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে আপাতত আর কোনো ফান্ড গঠন করা হবে না। এছাড়া, ইডিএফ ফান্ড থেকে প্রদানকৃত অর্থ সমন্বয় করে এর আকার ধীরে ধীরে কমানো হবে। ইতোমধ্যে ইডিএফ-এ ১ বিলিয়ন ডলার সমন্বয় হয়েছে।

অনুষ্ঠানে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম আর এফ হোসেন তাদের বক্তৃতায় তহবিলটি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালক মাকসুদা বেগম, একই বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহীম ভূঁইয়া ও অতিরিক্ত পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকসমূহের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।