ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সায়েম সোবহান আনভীরের জন্মদিনে বর্ণিল লাখো এতিম শিশু

প্রেস বিজ্ঞপ্তি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৫০, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩  
সায়েম সোবহান আনভীরের জন্মদিনে বর্ণিল লাখো এতিম শিশু

দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদামনের মানুষ সায়েম সোবহান আনভীর জন্মদিনে পরম মমতায় কাছে টেনে নিয়েছেন মমতাহীন বেড়ে ওঠা এতিম শিশুদের। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ বিভিন্ন শহর ও গ্রামের লক্ষাধিক এতিম শিশুর দিকে বাড়িয়েছেন সহমর্মিতার হাত। মুখে তুলে দিয়েছেন তৃপ্তিকর খাবার। নিজের জন্মদিনে অন্যের দিনটি এভাবেই বর্ণিল করে তুলেছেন তিনি। বরাবরের মতো এবারো কোনো উপহার গ্রহণ করে নয় বরং প্রদান করার মধ্য দিয়ে নিজের জন্মদিনকে রাঙালেন এই মহৎ মানুষটি।

মঙ্গলবার ছিল বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের জন্মদিন। ১৯৮১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মুখ দেখেন বহুমাত্রিক শিল্পের প্রবক্তা ও নতুন প্রজন্মের এই অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। এ উপলক্ষে কোনো অভিজাত আয়োজন নয় বরং মানবিক কর্মকাণ্ডকেই বেছে নেন তিনি। এই মানবিক উদ্যোগে তৃপ্তিকর খাবার পেয়েছে সারা দেশের প্রায় ৩০০ এতিমখানার এক লাখের বেশি শিশু। ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার ১০০টি মাদরাসার ৬৫ হাজার এতিম শিশুর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় সুস্বাদু খাবার। এ ছাড়া চট্টগ্রামের ২২টি মাদরাসায় ২০ হাজার এতিম শিশু, দারিদ্র্যপীড়িত মোংলার ৫৩টি মাদরাসায় ১০ হাজার এতিম শিশু, সিলেটের ১০টি মাদরাসার পাঁচ হাজার এতিম শিশুর কাছে পৌঁছায় এই বিশেষ খাবার। কুমিল্লার বাঞ্ছারামপুরে ৯৮টি মাদরাসায়ও ছিল এই বিশেষ আয়োজন।

ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় ৬৫ হাজার শিশুর জন্য এক বিশাল রান্নার আয়োজন হয় বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের সবগুলো হলজুড়ে। সংখ্যাটি পাঁচ হাজার হোক কিংবা এক লাখ, এতিম শিশুদের জন্য রান্নার কাজটি হয় পরম স্নেহ আর মমতা নিয়ে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আর খাবারের মান ছিল অত্যন্ত উন্নতমানের।

সরেজমিনে দেখা যায়, এতিম শিশুদের জন্য রান্নার আয়োজনেও ছিল উৎসবের আমেজ। খাবারের আয়োজনে ছিল বিশেষ আকর্ষণ। ৬০ থেকে ৬৫টি গরু জবাই করে প্রস্তুত করা হয় মুখরোচক খাবার। আর পুরো আয়োজন সরাসরি তদারকি করেছেন সায়েম সোবহান আনভীর নিজেই। সোমবার দিবাগত রাতের সব ক্লান্তি ভুলে সকালেও চলে খাবার বিতরণের যাবতীয় প্রক্রিয়া। দিন-রাতের হিসাব ভুলে এই সুস্বাদু আর অভিজাত খাবার তৈরি ও বিতরণ প্রক্রিয়ার বিরামহীন কর্মযজ্ঞে নিযুক্ত ছিল দেড় শতাধিক কর্মী। শিশুদের মনে একটু উৎসবের ছোঁয়া দিতে পেরে তারাও নিজেদের খুবই ভাগ্যবান মনে করছেন।

দেশের সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, মঙ্গলবার সকালটি অন্যদিনের চেয়ে একটু ভিন্নভাবে ধরা দেয় এতিম শিশুদের কাছে। খুশির সুবাসে ভরে ওঠে তাদের চারপাশ। এতিম শিশুদের খাবারের থালা পূর্ণ রয়েছে তাদের প্রিয় খাবারে, যেখানে উপাদান হিসেবে ছিল খানিকটা মায়ের স্নেহ কিংবা বাবার আদর।

তবে শুধু ঢাকাই নয়, দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে অবহেলিত এসব শিশুর মনে খুশির চিহ্ন এঁকে দিয়েছেন সায়েম সোবহান আনভীর। চট্টগ্রাম, সিলেট, নড়াইল, খুলনা, মোংলা, গোপালগঞ্জ, বাঞ্ছারামপুরের দুইশ’র অধিক এতিমখানা ও মাদরাসার প্রায় ৫০ হাজার শিশুর জন্যও উপহার হিসেবে ব্যবস্থা করেছেন মুখারোচক অভিজাত খাবার। দূর থেকে পাওয়া এমন অভূতপূর্ব ভালোবাসা পেয়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা কোমল শিশুদের হাতগুলো জড়ো হয়েছিল মোনাজাতে। শিশুদের আবেগি আধো আধো কথায় উঠে আসে সৃষ্টিকর্তার প্রতি ধন্যবাদ আর সায়েম সোবহান আনভীরের প্রতি কৃতজ্ঞতা।

রাজধানীর ভাসানটেক জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার প্রিন্সিপাল মাওলানা শাহাদাত হোসাইন এমদাদি বলেন, এই মাদরাসায় ৩৫০ জন ছাত্র রয়েছে। স্থানীয় ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সহযোগিতা নিয়ে এখানকার কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের তত্ত্বাবধায়নে প্রতি মাসেই মাঝেমধ্যে এতিম ও মাদরাসা ছাত্রদের জন্য খাবার পান তারা। আজকে তৃপ্তিকর খাবার পেয়ে শিশুরা অনেক খুশি হয়েছে। সবাই সায়েম সোবহান আনভীরের জন্য দোয়া করেছে।

জন্মের পর থেকে পরিবারের সব সদস্যদের পরম আদর ও যত্নে বেড়ে ওঠে শিশুরা অবুঝ এই প্রাণগুলো সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ আর পিতা-মাতার অতুলনীয় ভালোবাসায় পরিণত হয় পরিপূর্ণ মানুষে কিন্তু মানবজীবনের এই বন্ধুর পথচলায় অনেক শিশুকেই বেড়ে উঠতে হয় মা-বাবা ছাড়া এক অসীম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। যেখানে থাকে না মায়ের স্নেহের ঘ্রাণ আর বাবার ভরসা। বাবা-মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত এই শিশুরা সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহে বেড়ে ওঠে বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদরাসায় একমুখী এই জীবনে। সবই থাকে, থাকে না কেবল কোনো পারিবারিক উৎসবের উন্মাদনা। কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তার দৃষ্টির আড়াল কিছুই হয় না। তিনি কোমলমতি এই শিশুদের জীবনকে প্রায়ই তার প্রিয় বান্দাদের মাধ্যমে আনন্দের বর্ণিল রঙে রাঙিয়ে তোলেন হয়তোবা তাদেরই একজন সায়েম সোবহান আনভীর; যিনি কখনই জন্মদিন নয়, উদযাপন করেন জীবনকে স্বর্গীয় মমতায় মাখা শিশুদের এ নিঃস্বার্থ খুশির মাঝেই নিজের জন্য অমূল্য উপহারটি খুঁজে পান।

অবশ্য এবারই প্রথম নয়, প্রতিবছরই জন্মদিনটি শিশুদের সঙ্গে উদযাপন করে থাকেন সায়েম সোবহান আনভীর। এ ছাড়া এতিম শিশুদের নিয়ে এটিই তার একমাত্র আয়োজন নয়। এ বিশেষ আয়োজন চলমান থাকে সারাবছর প্রতি। শুক্রবার নগরীর প্রায় পাঁচ হাজার অসহায় ও এতিম শিশুর মধ্যে খাবার বিতরণ করেন তিনি। এ ছাড়া প্রতি বছর তার নির্দেশনায় পুরো রমজান মাসজুড়ে চলে প্রায় দুই লাখ রোজাদারকে ইফতার করানোর এক মহাকর্মযজ্ঞ। শুধু তাই নয়, ২০২২ সালে সামর্থ্যহীন ২৬ মুসল্লির ওমরাহ হজের সকল খরচ তিনি বহন করেছেন। যা এখনো চলমান জন্মদিনে বসুন্ধরা এমডির এমন মহৎ ও মানবিক আয়োজন বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।

ঢাকা/এনএইচ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়