ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

দুই দেশ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন সার কিনবে সরকার

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৩, ২৯ মে ২০২৩   আপডেট: ১৯:৩৩, ২৯ মে ২০২৩
দুই দেশ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন সার কিনবে সরকার

ছবি: সংগৃহীত

দেশের কৃষিখাতে ব্যবহারের জন্য ৬০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির (কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত) দুটি প্রস্তাবসহ ৫টি ক্রয়প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৫৫৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

সোমবার (২৯ মে) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় ক্রয় প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, সভায় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ১টি এবং ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য ৫টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। ক্রয় কমিটির প্রস্তাবগুলোর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ২টি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ২টি এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ১টি প্রস্তাব ছিল। ক্রয় কমিটির অনুমোদিত ৫টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ৫৫৭ কোটি ৬৪ লাখ ৬০ হাজার ২০৪ টাকা।

সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার থেকে ১৬তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। কাতার থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৬ লাখ ৩০ হাজার মে. টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী সারের মূল্য নির্ধারণ করে প্রতি মে. টন ৩১৯.১৭ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩০ হাজার মে. টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৯৫ লাখ ৭৫ হাজার ১০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৪ কোটি ৫ লাখ ২৬ হাজার ১১৭ টাকা।

সভায় রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ১১ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানি অপর একটি প্রস্তাবেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর আগে, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৩ লাখ ৬০ হাজার মে. টন ইউরিয়া সার আমদানির সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১১ম লটে ৩০ হাজার মে.টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানি করতে ব্যয় হবে ৯৫ লাখ ৭৫ হাজার ১০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৪ কোটি ৫ লাখ ২৬ হাজার ১১৭ টাকা।

সূত্র জানায়, ‘সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর’ টোল আদায় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সার্ভিস প্রোভাইডার নিয়োগের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। নরসিংদী সড়ক বিভাগের আওতায় ‘সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর’ টোল আদায়ের জন্য সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেডের (সিএনএসএল) সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ (৫ বছর ৩ মাস) আগামী ৩১ মে তারিখের শেষ হবে। নতুন সার্ভিস প্রোভাইডার নিয়োগের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত ৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছে রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল (আরএফপি) ইস্যু করা হলে প্রস্তাব দাখিল করে। ৪টি প্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। প্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে পিইসি কর্তৃক নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশকৃত সর্বোচ্চ স্কোর অর্জনকারী দরদাতা প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেডকে আগামী দুই বছরের জন্য নিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ২৮ কোটি ৮৫ লাখ ৫০ হাজার ৬৮৩ টাকা। আশা করা যাচ্ছে প্রস্তাবিত দুই বছরে সেতুটি থেকে ১৪৪ কোটি ৯৫ লাখ ৭৭ হাজার ২০০ টাকা টোল আদায় হবে।

সভায়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফর রোড ট্রান্সপোর্ট কানেকটিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি’ প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে যৌথভাবে এসএমইসি, ওসিজি, ডিওএইচডব্লিউএ, আয়াস্ত্র, এসিই জেস, এবং ডিডিসি। এতে ব্যয় হবে ৭১ কোটি ৮৭ লাখ ৫৭ হাজার ২৮৭ টাকা।

সভায় ১২টি নন-সিআরইউ কনডেনসেট ফ্র্যাকশনেশন প্ল্যান্টের জন্য কাঁচামাল হিসেবে ৩০ হাজার মে. টন ডিজেল-রিচ কনডেনসেট আমদানির একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিএসটিআই নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী জ্বালানি তেল উৎপাদন করতে সক্ষম না হওয়ায় বন্ধ হওয়া ১২টি নন-সিআরইউ প্ল্যান্ট পুনরায় চালু করার লক্ষ্যে কাঁচামাল হিসেবে ৩০ হাজার মে. টন ডিজেল-রিচ কনডেনসেট আমদানির জন্য জি-টু-জি তালিকাভুক্ত ৭টি প্রতিষ্ঠানের কাছে দরপত্র আহ্বান করা হলে মাত্র ১টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। প্রস্তাবটি আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় রেসপনসিভ হয়। দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে পিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান পিটি ভূমি সিয়াক পুসাকু জাপিন, ইন্দোনেশিয়া ৩০ হাজার মে. টন ডিজেল-রিচ কনডেনসেট সরবরাহ করবে। এতে ব্যয় হবে ২৪৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

এর আগে, অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জি-টু-জি চুক্তির আওতায় কাতার থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এলএনজি ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়