ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৫, ১ জুন ২০২৩   আপডেট: ১৭:২০, ১ জুন ২০২৩
২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন

২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে লোডশেডিংমুক্ত দেশ গড়তে বিদ্যুৎখাতে উৎপাদনের মহাপরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো বলে আমরা অঙ্গীকার করেছিলাম। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ সক্ষমতা সম্প্রসারণের ফলে এরই মধ্যে দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০০৯ সালে ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট থেকে বর্তমানে ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভবিষ্যতে বর্ধিত বিদ্যুৎ চাহিদার বিষয় বিবেচনায় রেখে আমরা উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানির ব্যবহার বহুমুখীকরণের জন্য গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি কয়লা, তরল জ্বালানি, ডুয়েল-ফুয়েল, পরমাণু বিদ্যুকেন্দ্র এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, পটুয়াখালীর পায়রা, কক্সবাজারের মহেশখালী ও মাতারবাড়ি এলাকায় নির্মিত পাওয়ার হাবগুলোতে মেগা-প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। রামপালে কয়লাভিত্তিক ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল প্রজেক্ট (প্রথম ইউনিট) ও পায়রায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পে এরই মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। মাতারবাড়িতে কয়লাচালিত আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে।

সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে জীবাশ্ম এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক মোট ১২ হাজার ৯৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন আছে এবং ২ হাজার ৪১৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি প্রক্রিয়াধীন আছে। এ ছাড়া সরকার মোট ১০ হাজার ৪৪৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও ৩৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। 

তিনি আরো বলেন, দেশের অভ্যন্তরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার পাশাপাশি আমরা আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কূটনৈতিক সম্পর্কের মাধ্যমেও বিদ্যুৎ সংগ্রহ করছি। ২০৪১ সালের মধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা করা হয়েছে। বর্তমানে আন্তঃদেশীয় গ্রিড সংযোগের মাধ্যমে ভারত থেকে ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। এছাড়া ভারতের ঝাড়খন্ডে নির্মিত দুই ইউনিটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।

নেপাল, ভুটান এবং ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তির বিষয়টি উল্লেখ করে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, নেপালের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে নির্মিতব্য জল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশ, ভুটান এবং ভারতের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত পর্যায়ে স্বাক্ষরের অপেক্ষায় আছে।

সব মিলিয়ে ২০৩০ সালে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 

হাসনাত/তারা

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়