ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

পুঞ্জীভূত ঋণস্থিতি বাড়লেও ঝুঁকিসীমার নিচে আছে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৫, ২০ আগস্ট ২০২৩  
পুঞ্জীভূত ঋণস্থিতি বাড়লেও ঝুঁকিসীমার নিচে আছে

সরকারের পুঞ্জীভূত ঋণস্থিতি ক্রমেই বাড়ছে। তবে, তা এখনো ঝুঁকি সীমার নিচে আছে। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই, ২০২২ থেকে মার্চ, ২০২৩) সরকারের মোট (অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক) পুঞ্জীভূত ঋণস্থিতি বেড়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। 

২০২১-২০২২ অর্থবছর শেষে সরকারের মোট পুঞ্জীভূত ঋণস্থিতির পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩২ দশমিক ৩৮ শতাংশ। অন্যদিকে, সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে তথা গত মার্চ শেষে সরকারের মোট পুঞ্জীভূত ঋণস্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৪৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকায়। এটি জিডিপির ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে সরকারের মোট পুঞ্জীভূত ঋণস্থিতির পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা (জিডিপির ৩০ দশমিক ৫৬ শতাংশ)। সে হিসাবে সর্বশেষ তিন মাসে সরকারের মোট পুঞ্জীভূত ঋণস্থিতি বেড়েছে ৮৮ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগ প্রণীত ঋণসংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, করোনা-উত্তর পরিস্থিতি মোকাবিলা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধজনিত কারণে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধির কারণে সার্বিক ঋণস্থিতি বেড়েছে। তবে, এটি এখনো ঝুঁকিসীমার অনেক নিচে আছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ‘টেকসই ঋণ কাঠামো’র (ডেট সাসটেইনেবল ফ্রেমওয়ার্ক—ডিএসএফ) মানদণ্ড অনুযায়ী, জিডিপির ৫৫ শতাংশ ঋণকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, সমাপ্ত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে সরকারের পুঞ্জীভূত মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ১৫ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ২০ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং মোট পুঞ্জীভূত ঋণের ৬৩ শতাংশ।

সরকারের পুঞ্জীভূত অভ্যন্তরীণ ঋণস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, বর্তমানে ব্যাংক থেকে সরকারের গৃহীত ঋণের পরিমাণ বেশি। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এই ঋণ মূলত টাকা ছাপিয়ে সরকারকে সরবরাহ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিচ্ছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তবে, আশার কথা হচ্ছে, সঞ্চয়পত্র খাত থেকে সরকারের গৃহীত পুঞ্জীভূত ঋণ কমেছে।

তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পুঞ্জীভূত মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের মধ্যে ব্যাংক থেকে গৃহীত পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৪ লাখ ৯৪ হাজার ১০১ কোটি টাকা এবং ব্যাংক-বহির্ভূত (সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য) খাতে পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৪ লাখ ২১ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র খাতে পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই, ২০২২ থেকে মার্চ, ২০২৩) সরকারের পুঞ্জীভূত বৈদেশিক ঋণস্থিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ১২ শতাংশ এবং মোট পুঞ্জীভূত ঋণের ৩৭ শতাংশ।

অর্থ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, আগামী কয়েক মাসে ঋণের স্থিতি খানিকটা বাড়তে পারে।

হাসনাত/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়