ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

যে কারণে বেসরকারি মিল থেকে চিনি কিনছে টিসিবি

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০০, ১১ মার্চ ২০২৪  
যে কারণে বেসরকারি মিল থেকে চিনি কিনছে টিসিবি

চিনি সংগ্রহের জন্য দরপ্রস্তাব আহ্বান করার পরও সাড়া না পাওয়া এবং দাম বেশি উল্লেখ করায় দরপ্রস্তাব বাতিল করতে হয়েছে। সরকারি চিনি মিলে উৎপাদিত চিনির দাম অনেক বেশি। এ অবস্থায় রোজা সামনে চলে আসায় চিনি উৎপাদনকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এস আলম রিফাইনড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ৮ হাজার মেট্রিক টন চিনি সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতি কেজি চিনির দাম ১৩৪.৫০ টাকা হিসেবে এতে মোট ব্যয় হবে ১০৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডধারীদের কাছে প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকার পরিবর্তে ১০০ টাকা দরে বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। পরে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তা প্রত্যাহার করে প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। সে হিসেবে প্রতি কেজি চিনিতে সরকারের ভর্তুকি দিতে হবে ৬৪.৫০ টাকা। পবিত্র রমজানে সাধারণ মানুষের হাতে সুলভ মূল্যে চিনি পৌঁছে দেওয়ার জন্য সরকার এই ভর্তুকি দামে চিনি সরবরাহ করবে বলে সূত্র জানিয়েছে।  

সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় ১ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন চিনি কেনার লক্ষ্য নির্ধারণ করে। এর আগে মোট ১৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি কেনার চুক্তি হয়েছে। এবার আরো ৮ হাজার মেট্রিক টন (৫০ কেজির বস্তা) কেনার উদ্যোগ নেওয়া হলো।

সূত্র জানায়, টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের ১ কোটি পরিবারের মাঝে প্রতি মাসে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলছে। সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের কাছে চিনি বিক্রির লক্ষ্যে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য করপোরেশন থেকে চিনি কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সংস্থাটি চিনির মিলগেট মূল্য প্রতি কেজি ১৬০ টাকা প্রস্তাব করে, যা বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চিনির পরিবর্তে স্থানীয় বাজার/আন্তর্জাতিক উৎস থেকে জরুরি ভিত্তিতে চিনি কেনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ছয়টি দরপ্রস্তাবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এছাড়া, তিনটি দরপ্রস্তাবে বেশি দাম প্রস্তাব করায় সেসব দরপ্রস্তাব বাতিল করা হয়। এ অবস্থায় রমজানকে সামনে রেখে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) চিনি কেনা জরুরি হয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তুলনামূলক কম দামে ও স্বল্প সময়ে প্রাপ্তি বিবেচনায় টিসিবি ৮ হাজার মেট্রিক টন চিনি কেনার সিদ্ধান্ত নেয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্থানীয় রিফাইনারি এস আলম রিফাইনড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড দরপ্রস্তাব পাঠায়। ৫০ কেজির বস্তায় ৮ হাজার মেট্রিক টন চিনি সরবরাহে প্রতি কেজি চিনির দাম ২ শতাংশ এটিআই এবং টিসিবি’র গুদামে পৌঁছানো খরচসহ ১৩৫ টাকা উল্লেখ করে। তবে, নেগোশিয়েশনের মাধ্যমে প্রতি কেজিতে ৫০ পয়সা কম দামে এই চিনি সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়। অর্থাৎ প্রতি কেজি ১৩৪.৫০ টাকা দরে ৮ হাজার মেট্রিক টন চিনি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ১০৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। দরপ্রস্তাবের শর্ত অনুযায়ী, আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে টিসিবি’র গুদামে এই চিনি পৌঁছাবে।  

ঢাকা/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়