ঢাকা     শনিবার   ১৫ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ২ ১৪৩১

গ্রামের বড় ব্যবসায়ী, ডাক্তারসহ অন্যরা করের আওতায় আসবেন

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৩, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৮:৫৩, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
গ্রামের বড় ব্যবসায়ী, ডাক্তারসহ অন্যরা করের আওতায় আসবেন

জেলা, উপজেলা ও গ্রামাঞ্চলে যেসব ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, আইনজীবীর মতো সরকারি-বেসরকারি কর্মজীবীরা রয়েছেন; যারা কর দেওয়ার মতো আয় করছেন, সবার কাছে কর আদায়ের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকদের।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘‘গ্রামে অনেকে অনেক আয় করছেন বলে ডিসিরা জানিয়েছেন। তারা কিন্তু কর দিচ্ছেন না। আমরা এখন কর সংগ্রহ বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়াতে চাই। এ বিষয়ে এনবিআর এখন উদ্যোগ নেবে। তাদের একটি তালিকা ডিসিরা দেবে।’’

‘‘ব্যবসায়ীরা প্রচুর বিক্রি করেন, চিকিৎসক আইনজীবীরা যে ফি নেন, তাদের রশিদ বা ডিজিটাল পেমেন্ট মেথডে এনে তাদেরও করের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’’ 

উপদেষ্টা বলেন, ‘‘দেশের চিকিৎসক-আইনজীবীরা সরাসরি ক্যাশ ট্রানজেকশন করেন। এর কারণে তাদের করের আওতায় আনা যায় না। চিকিৎসকরা যে ফি নেন, তার রিসিট তো কোন মানুষ নেয় না। এই ফি যদি ডিজিটাল মাধ্যমে দেওয়া হয়, তাহলে কিন্তু তার একটা রেকর্ড থাকে। বিদেশে কিন্তু এগুলো সব রেকর্ডেড।’’

‘‘এখন তাদের (চিকিৎসক) যে অ্যাটেনডেন্ট থাকে ফি কালেকশন করে। তাদের রশিদ দিয়ে ফি নেওয়ার ব্যবস্থা করা দরকার। আইনজীবী বা অন্যান্য পেশার জন্যও এমন ব্যবস্থা করতে হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘ডিসিরাই আজ উত্থাপন করেছেন, গ্রামাঞ্চলে ব্যবসায়ীরা অনেক আয় করেন। তখন এনবিআর এ বিষয়টি নিয়ে ড্রাইভ দিতে বলেছে। আমাদের ট্যাক্সের আওতা না বাড়ালে তো হবে না। এমনিতেই তো দাবি থাকে, ভ্যাট কমান-ট্যাক্স কমান। সুতরাং ভ্যাট-ট্যাক্স সহনীয় পর্যায়ে রেখে ট্যাক্স গ্রহণের পরিধিটা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এই ট্যাক্স নেটটা বাড়িয়ে রাজস্ব আরো বিস্তৃত করতে পারি। মোটকথা জোর করে করের পরিমাণ না বাড়িয়ে ট্যাক্সের নেট বাড়ানো হবে। আমাদের শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে ৫০ থেকে ৬০ লাখ কিন্তু কর দেয় মাত্র পাঁচ লাখ।

এ ছাড়া, সম্মেলনে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কর্মসংস্থান বাড়াতে ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামে অ্যামপ্লয়মেন্টটা বাড়াতে হবে। সেখানে বাড়ানো সহজ। চায়নাতে গ্রাম্য শিল্পের সাথে গভীর যোগাযোগ। চায়নার প্রত্যন্ত একটি গ্রামে তৈরি হওয়া পণ্য আমেরিকার ওয়ালমার্টেও পাবেন। অথচ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই জিনিসগুলো যোগাযোগের অভাবে উঠে আসে না। যোগাযোগ না থাকলে ব্যালেন্স ডেভেলপমেন্টটা করা সম্ভব হবে না।’’

তিনি বলেন, ‘‘এ ছাড়া ডিসিরা যে দুর্গম এলাকা রয়েছে, সেগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা বাড়ানো এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ব্যবস্থার কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, এসএমই খাতে ছোট উদ্যোক্তা লোন পায় না। সেগুলো আমরা ব্যবস্থা নেব।’’

উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সরকারের যে কোনো সিদ্ধান্ত আমরা বাস্তবায়ন করি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিয়ে। মাঠ পর্যায়ের অফিসাররা যদি দক্ষ ও সেবক হোন, তাহলে জনগণ যে সেবাটা পান সেটা কার্যকর হয়। আমরা সরকারের সঙ্গে ডিসিদের যোগাযোগ বাড়ানোর কথা বলেছি।’’ 

উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘‘গ্রামাঞ্চলে কৃষি কিন্তু এখন একটি বড় সোর্স। সেটা ঠিক না থাকলে আমরা এত মানুষকে খাওয়াতে পারতাম না। সেদিকে নজর দেওয়ার কথা আমরা বলেছি ডিসিদের।’’

ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়